সংক্ষিপ্ত
এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন নাগাল্যান্ডে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাই পদে থাকার অধিকার নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
সংসদে ক্ষমা চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নাগাল্যান্ডের গুলি (Nagaland killings)চালনার ঘটনা দুঃখজনক, বলেছে সেনাও। তবে এখনই এসব কথায় চিঁড়ে ভিজবে না। নাগাল্যান্ডের ঘটনায় আবারও কাঠগড়ায় (AFSPA repeal) উঠছে আফস্পা(AFSPA) বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির হাতের বাইরে যেতে পারে, যেসব এলাকায়, সেখানে ভারতীয় সেনাকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে। সেটিই হল আফস্পা।
আফস্পা কী?
দ্য আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট সংক্ষেপে আফস্পা। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তি দমনে সেনাবাহিনীর হাতে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দিতে ১৯৫৮ সালে এই আইন চালু করে কেন্দ্র। আজও অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মেঘালয়, অসম এবং ত্রিপুরায় চালু আছে আফস্পা। স্বাধীনতার এত বছর পরও এই আইন চালুর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে হামেশাই প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তর-পূর্বের মানুষদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, আইনের অপপ্রয়োগ করে সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের উপরই দমন পীড়ন চালায়৷ এই আইনে বলা আছে, আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন কোনও ব্যক্তিকে স্রেফ সন্দেহের বশে সেনাবাহিনী গ্রেফতার এবং গুলি করতে পারবে৷ বিনা ওয়ারেন্টে যে কোনও জায়গায় তল্লাশি চালার অধিকারও দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
কোন কোন এলাকা এর আওতার বাইরে
AFSPA অসম, নাগাল্যান্ড ,অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, জারি রয়েছে। তবে মণিপুরের ইম্ফল মিউনিসিপ্যাস কাউন্সিল এলাকা এই আইনের আওতার বাইরে পড়ে। একইভাবে অরুণাচল প্রদেশের চাংলাং, লংডিং ও তিরাপ জেলাসহ অসম সীমান্তবর্তী ৮টি থানা এলাকায় এই আইনের আওতায় পড়ে। এদিন নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন বা এনইএসও একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন উত্তর পূর্ব ভারতের জনগণের মঙ্গলকামনা করে এই আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিৎ। তা না হলে এই অঞ্চলের মানষ আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বিশেষ আইন বলবৎ থাকায় সেনা বাহিনীর সদস্যরা দায়মুক্ত হয়ে কাজ করছে।
এদিকে, সোমবার তৃণমূল দাবি করে অমিত শাহ যেন অবিলম্বে পদত্যাগ করেন। সুস্মিতা বলেন অন্য কোনো দেশে এই ঘটনা ঘটে থাকলে থাকলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করতেন। কিন্তু আমি মনে করি অমিত শাহ তার পদত্যাগ করবেন না। নাগাল্যান্ডে ১৪ জন অসামরিক এবং একজন সেনা জওয়ান মারা গেছে। এটি একটি লজ্জাজনক কাজ।" সুস্মিতা আরও অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধীদের জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের কোনও সুযোগ ছাড়ে না।
এদিকে, নাগাল্যান্ডে সেনা বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা ছিল একটি ভুল। বর্তমানে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকলেও গোটা ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে যাওয়াতেই সন্দেহ, ভুলবশত গুলি নাগাল্যান্ডে, স্বীকার করলেন অমিত শাহ। সোমবার নাগাল্যান্ড ইস্যুতে সংসদে এমনই বিবৃতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।