সংক্ষিপ্ত

অসম রাজ্যে নির্মাণ করা হয়েছে ২টি বিশাল অস্থায়ী জেল। রাজ্যজুড়ে পাকড়াও করা সমস্ত শিশু-বিবাহিতদের নিয়ে এসে এই জেলে রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। 

অসমের বাল্যবিবাহ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্য জুড়ে অভিযান চালিয়ে ২,৬৬৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অসংখ্য মহিলা।

এবিষয়ে সতর্ক করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অভিযান চলতেই থাকবে। এখনও পর্যন্ত ২,৬৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে অভিযান জারি রাখবে সরকার। এই রোগ দূর করতে রাজ্যবাসীর সহযোগিতা চাইছি।”

পুলিশ সূত্রে খবর, কেবলমাত্র পুরুষরা নয়, ধৃতদের মধ্যে বহু মহিলারাও আছেন। জাতীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসম পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে আইন অবমাননার অভিযোগে মোট ৭৮ জন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে গোয়ালপাড়ার মাটিয়া ট্রানজিট শিবির এবং শিলচরের একটি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাল্যবিবাহ আইন ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ধৃতদের এই জেলেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যবাসিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, বাল্যবিবাহ আইন অমান্য কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকেও এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ দেন তিনি। তাঁর নির্দেশ মেনেই দেশ জুড়ে ধরপাকড়ের অভিযানে নামে পুলিশ। ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে মহিলারা প্রশ্ন তুলেছিলেন, বেছে বেছে কেন পুরুষদের গ্রেফতার করা হচ্ছে? সরকারের এই অভিযানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাস্তায় প্রতিবাদেও নেমেছেন অসমের শ’য়ে শ’য়ে মহিলারা।

২০০৭ সালের ১ নভেম্বরে কার্যকর হওয়া একটি আইন ভারতে সংঘটিত সমস্ত বাল্যবিবাহকে ‘নিষিদ্ধ’ করে। বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া সমস্ত ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সহায়তা প্রদান করে এই আইন। যদিও এটা মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইনকে (যেখানে বাল্য বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে) অগ্রাহ্য করে না। তবে, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল, যেখানে বলা হয়, একজন ‘শিশু বধূ’-র সাথে যৌনতায় লিপ্ত হওয়া অপরাধ। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ভারতের ফৌজদারি আইনশাস্ত্র শিশু-বিবাহকে সব দিক থেকে ‘বেআইনি’ করে দেয়। এই আইনের উদ্দেশ্য হল বাল্যবিবাহ এবং তার সাথে যুক্ত থাকা সমস্ত আনুষঙ্গিক বিষয়গুলিকে নিষিদ্ধ করা।

অসমের মুখ্যমন্ত্রীর আদেশের দু’দিনের মধ্যে এই আইনের ভিত্তিতে ১৮০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৪ হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার পর থেকে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এই ধৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৬ শ’ ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন-

বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যেতেই আলিপুরদুয়ারে শুভেন্দুর জনসভা, পরের দিনই কোচবিহারে অভিষেক

২০০ কোটি টাকা না পেলেই অমিত শাহকে খুন? কলকাতা থেকে পাওয়া চিঠি নিয়ে প্রবল ধন্দে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা
ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে কতক্ষণ বেঁচে থাকা যায়? তুরস্ক-সিরিয়ার ভয়াবহতা নিয়ে সচেতন করছেন বিশেষজ্ঞরা