সংক্ষিপ্ত

নেতাজিকে নিয়ে আবারও সরব অনিতা পাফ। তিনি বলেন, তাঁর বাবা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গঠনের স্বপ্ন দেখিছিলেন। সকল মানুষের সমানাধিকারের কথা বলতেন।

 

'দেশকে স্বাধীন করার জন্য ফ্যাসিস্ট দেশগুলির কাছ থেকে সাহায্য চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন নেতাজি।' সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৬ তম জন্মবার্ষিকীর মাত্র এক দিন আগে রবিবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তাঁরই কন্যা অনিতা বোস পাফ। একটি বিবৃতি জারি করে জিনি বলেন, নেতাজি যে দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তারাই একমাত্র সাধারণ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইকে সমর্থন করতে ইচ্ছুক ছিল।

'ভারতের স্বাধীনতার জন্য তাঁর সংগ্রামে তিনি নিজেকে ফ্যাসিস্ট দেশগুলির সহযোগিতা ও সমর্থন চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে তিনি তাদের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ ও এজেন্ডা ভাগ করে নেননি। কিন্তু সেই সময় সেই দেশগুলি একমাত্র ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইকে সমর্থন জানাতে রাজি ছিল।' জার্মানিতে থাকেন অনিতা বোস পাফ । তিনি এদিন জাপানের রেনকোজির মন্দিরে সংরক্ষিত নেতাজিত চিতাভষ্ম দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আরও একবার আহ্বান জানিয়েছেন। অনিতা বোস পাফ বলেছন, '৭৭ বছর আগে বিদেশের মাটিতেই মৃত্যু হয়েছিল নেতাজির। কিন্তু এখনও তাঁর দেহাবশেষ বিদদেশে রয়েছে। তবে দেশবাসী তাঁকে মনে রেখেছে। এই অবস্থায় দেশের সবকটি রাজনৈতিক দল একমত হয়ে নেতাজির আত্মত্যাগকে মর্যাদা জানায়। তাঁকে শ্রদ্ধা করে। তাই এবার নেতাজির চিতাভষ্ম দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা জরুরি। '

অর্থনীতিবীদ অনিতা বোস পাফ আরও বলেছেন, বর্তমান ভারতে নারী আর পুরুষের জন্য শিক্ষা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, তাঁর বাবাকে তিনি সমাজতন্ত্রের জন্য অনুপ্রাণিত একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেই দেখেন। নেতাজি একটি আধুনিক, সমাজতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক দেশ তৈরির স্বপ্ন দেখতেন। তিনি আরও বলেছেন, 'নেতাজি সব ধর্ম, বর্ণ ও সমস্ত সামাজিক স্তরের সদস্যদের জন্য এমনকি মহিলা ও পুরুষদের জন্য সমানাধিকার প্রতিষ্টা, সুযোগ তৈরি ও কর্তব্যে বিশ্বাস করতেন। এর অর্থ ছিল সমস্ত সুবিধেবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়ন ও মুক্তি। হিন্দু ধর্মের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ আস্থা। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ স্বাধীন ভারত তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেখানে সকল ধর্মের সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে বাস করতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রাখবে। এই মূল্য়বোধগুলি তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল আর্মির সদস্যদের মধ্যে অনুশীলন শুরু করেছিলেন।'

গতকাল আরএসএস ও বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন অনিতা বোস পাফ। আরএসএস ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অনিতা। তিনি বলেছেন,এই পদক্ষেপ তাঁরা বাবার উত্তরাধিকার ও মতাদর্শের 'আংশিক শোষণ' করার জন্য করা হয়েছে। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জার্মানি থেকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, আরএসএস এর মতাদর্শের সঙ্গে জাতীয় নেতার মতাদর্শের কোনও মিল নেই। তিনি বলেন আরএসএস জাতীয়তাবাদী আর নেতাজি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন। দুটির ভিত্তি সম্পূর্ণ আলাদা। অনিতা বোস পাফের কথায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে দেশের অন্যান্য যে কোনও রাজনৈতিক দলের তুলনায় কংগ্রেসের মিল রয়েছে সবথেকে বেশি।