সংক্ষিপ্ত

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত দেশের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করে স্মৃতি ইরানি বলেন মহিলাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানো নিয়ে এক বছরেরও আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Prime Minister Narendra Modi)। এর এক বছরেরও বেশি সময় পরে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা (Union Cabinet) মহিলাদের জন্য বিবাহের বৈধ বয়স (legal age of marriage for women) ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর (18 to 21 years) করার প্রস্তাব পাস করেছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)। তাঁর দাবি এই সিদ্ধান্ত দেশের মহিলাদের স্বনির্ভর ও আত্মনির্ভর (atmanirbhar) হতে সাহায্য করবে। 

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত দেশের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করে স্মৃতি ইরানি বলেন মহিলাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০-র কেন্দ্রীয় বাজেটে মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেট পেশ করার সময় জানান, ১৯৭৮ পর্যন্ত মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৮ বছর। আগামী দিনে এই বয়সসীমা আরও বাড়াতে চায় কেন্দ্র। এই বিষয়ে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠনেরও প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।

তবে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের দাবি ছিল যদি ১৮ বছর বয়েসে (age of 18) ভোট দেওয়ার অধিকার থাকতে পারে, তবে কেন ১৮ বছর বয়েসে বিয়ে (marries) হতে পারবে না। সমাজবাদী পার্টির এক সাংসদ বলেন ১৮ বছরেই শুধু নয়, ১৬ বছর বয়েসেও যদি কোনও মেয়ের বিয়ে হয় তবে তাতে কোনও সমস্যা নেই। তাঁর দাবি কোনও মেয়ে মা হওয়ার ক্ষমতা যখনই অর্জন করে, তখনই তার বিয়ে দেওয়া যায়।  

ইরানি এদিন বলেন মহিলাদের সমান অধিকার দিতে ৭৫ বছর দেরি হয়ে গেল। এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের ফলে কিশোরী গর্ভধারণ, মৃত প্রসব ও গর্ভপাতের মতো ঘটনার সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে। তিনি আরও জানান যে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী সাত শতাংশ মেয়ে গর্ভবতী বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রায় ২৩ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। কেন্দ্রের মোদী সরকার তার মেয়েদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেয়েদের বিয়ের বয়স ২১ বছর হলে তাঁরা পড়াশোনা করার ও জীবনে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আরও সময় পাবে। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে, সরকার বাল্যবিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইন, ২০০৬-এ একটি সংশোধনী আনবে। এছাড়াও বিশেষ বিবাহ আইন এবং হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-এর মতো ব্যক্তিগত আইনগুলিতেও সংশোধন নিয়ে আসা হবে বলে জানানো হয়েছে। জয়া জেটলির নেতৃত্বে কেন্দ্রের টাস্ক ফোর্স ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নীতি আয়োগে কিছু সুপারিশ জমা দেয়। এই সুপারিশের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সুপারিশের বিষয়গুলি ছিল মাতৃত্বের বয়স, অল্পবয়েসী মায়েদের মৃত্যুর হার কমানোর প্রয়োজনীয়তা, মায়েদের পুষ্টির সচেতনতা তৈরির মত সমস্যা।