সংক্ষিপ্ত
যারা ইতিহাস পছন্দ করেন বা পুরনো জিনিস ভালবাসের তাদের জন্য সুখবর। কারণ পুজোর মুখেই একটি নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এই রাজ্যে নয়। সুদূর মধ্যপ্রদেশে। মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভ প্রকল্প এলাকায় একটি প্রাচীন গুহার সন্ধান পাওয়া গেছে।
যারা ইতিহাস পছন্দ করেন বা পুরনো জিনিস ভালবাসের তাদের জন্য সুখবর। কারণ পুজোর মুখেই একটি নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এই রাজ্যে নয়। সুদূর মধ্যপ্রদেশে। মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভ প্রকল্প এলাকায় একটি প্রাচীন গুহার সন্ধান পাওয়া গেছে। যেখানে দেখতে অনেকটা প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দের মত। মথুরা ও কৌশম্বীর মত শহরের নাম লেখা ম্যুরাল শিলালিপিও পাওয়া গেছে। বুধবার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তরফ থেকে কর্মকর্তারা এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি ওই এলাকার বেশ কিছু ছবিও তাঁরা দিয়েছেন।
আইএসআই-এর একটি দল বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের প্রায় ১৭০ কিলোমিটার এলাকার জুড়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল। ১৯৩৮ সালের পর এই প্রথমবার এই এলাকায় প্রা. এস মাস ধরে চলে এই সার্ভেটি। তবে এখনও এই এলাকা পর্যটক বা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। তবে আগামী দিনে এই এলাকায় ভারতের পর্যটন মানচিত্রে বিশেষ স্থান অর্জন করবে বলেও আশা করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার।
গত ২০ মে থেকে ২৭ জুন জবলপুর সার্কেল থেকে বেশ কিছু ভাস্কর্য পাওয়া গেছে। যারমধ্যে ভগবান বিষ্ণুর কয়েকটি অবতার রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি গুহাতেই তৈরি হয়েছে প্রচীন মন্দিরটি। তেমনই জানিয়েছেন এএসআই কর্তারা। জবলপুর সার্কেলের এইএসআই সুপারিনটেনডিং প্রাত্নতাত্ত্বিক এককে বাজপেয়ী এই সমীক্ষার নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন প্রত্নত্ত্বাতিক এনপি চক্রবর্তী ১৯৩৮ সালে অনুসন্ধান করেছিলেন। তারপর এই প্রথমবার বান্ধবগড় এলাকায় সার্ভের কাজ হয়েছে। প্রাচীন গুহা, মন্দির, বৌদ্ধ অবশেষ, গণিত ভাস্কর্য, জলাশয়, ম্যুরাল শিলালিপি-সহ একাধিক সামগ্রীয় উদ্ধার হয়েছে। ব্রাহ্মী ও নগরীর মত পুরনো লিপি লেখা পাথরও পাওয়া গেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বলেও তিনি দাবি করেছেন।
ঐতিহাসিক দলের দাবি, হল এই এলাকায় দিনের পর দিন হিন্দু রাজবংশ শাসন করে গেছে। সেখানে বৌদ্ধ কাঠামো উদ্ধার হয়েছে। যা তাদের চমকে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন এএসআই-এর সদস্যরা। তাদের দাবি এই ঘটনাই প্রাচীন ভারতে ধর্মীয় সম্প্রতীর প্রমাণ দেয়।
সংস্থার দাবি উদ্ধারহওয়া জিনিসগুলির কার্বন চেস্টিং করে যা বোঝা যাচ্ছে তা হল এগুলি দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শতকের। উত্তর প্রদেশে অবস্থিত মথুরা ও কৌশাম্বীর মত পুরনো শহরগুলির নামও মধ্য প্রদেশে উদ্ধার হওয়া শিলালিপিতে পাওযা গেছে। যা তাদের অবাক করেছে বলেও জানিয়েছেন। ঐতিহাসিকদের দাবি এই আবিষ্কারে মাধ্যমে স্পষ্ট যে এই এলাকার সঙ্গে উত্তর প্রদেশ ও অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়িক যোগ ছিল। এই এলাকায় জোনপুর সালতানাতের মুঘল যুগের ও শর্কি রাজবংশের মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
এএসআই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ অনুসন্ধানে মোট ৩৫টি মন্দিরের নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে নয়টি আগের এবং ২৬টি মন্দির বা কালচুরি আমলের মন্দিরের অবশেষ। গুহাগুলির মধ্যে ২৬টি গুহাকে নতুন হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এগুলি দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে নির্মাণ হয়েছে। প্রায় ৫০টি বুদ্ধের মূর্তি পাওয়া গেছে।
কালাচুরি যুগের (৯ম-১১শ শতক) দুটি নতুন শৈব গণিত এবং দুটি নতুন স্তূপও নথিভুক্ত করা হয়েছে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়াও, বৌদ্ধ ধর্মের মহাযান সম্প্রদায়ের দেহাবশেষ যেমন চৈত্য আকৃতির দরজা এবং পাথরের বিছানা সম্বলিত কোষগুলিও প্রকাশ পেয়েছে, তারা বলেছে।