সংক্ষিপ্ত
তিনি এদিন কর্ণাটকের বিধায়ক কে আর রমেশ কুমারের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেন। নির্ভয়ার মায়ের দাবি অবিলম্বে ওই বিধায়ককে সাসপেন্ড করা উচিত।
ধর্ষণ যখন হবেই, তা উপভোগ করুন। এমন বেফাঁস মন্তব্য করে বিশ বাঁও জলে কর্ণাটক কংগ্রেসের বিধায়ক রমেশ কুমার। বিধায়কের এহেন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন ২০১২ সালের দিল্লির গণধর্ষণের নির্যাতিতা যে সারা দেশে নির্ভয়া নামে পরিচিত, তাঁর মা। তিনি এদিন কর্ণাটকের বিধায়ক কে আর রমেশ কুমারের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেন। নির্ভয়ার মায়ের দাবি অবিলম্বে ওই বিধায়ককে সাসপেন্ড করা উচিত।
কর্ণাটকের বিধায়ক রমেশ কুমারকে (Karnataka MLA KR Ramesh Kumar) সাসপেন্ড করার দাবি তুলে শুক্রবার নির্ভয়ার মা (mother of the 2012 Delhi gang-rape victim) বলেন এই মন্তব্য সমাজের জন্য অসম্মান, দেশের মেয়েদের জন্য অসম্মানের। এই রকম মানসিকতার লোকের জন্যই দেশের মেয়েদের নির্যাতন করতে সাহস পায় অপরাধীরা। এরকম লোকেদের জন্যই দেশের মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটে। কারণ অপরাধীরা জানে, তারা ঠিক ছাড়া পেয়ে যাবে।
নির্ভয়ার মা বলেন আজ থেকে নয় বছর হয়ে গেছে যখন নির্ভয়াকে রাজধানী দিল্লিতে চলন্ত বাসের মধ্যে অমানুষিকভাবে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এই ঘটনার পরেও ওই কংগ্রেস বিধায়ক রমেশ কুমার ধর্ষণের মত ঘটনাকে হাস্যকর বানিয়ে তুলেছে। এই ধরণের জঘন্য মানসিকতার লোককে সাসপেন্ড করা উচিত।
এদিকে, নিজের'ধর্ষণ উপভোগ করুন' বিবৃতিতে তুমুল বিতর্কের ঝড় তৈরি হওয়ার পরে ক্ষমা চেয়েছেন ওই বিতর্কিত কংগ্রেস বিধায়ক। বৃহস্পতিবার কর্ণাটক বিধানসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় কংগ্রেস বিধায়ক ও প্রাক্তন স্পীকার রমেশ কুমার বলেন যখন ধর্ষণ অনিবার্য, তখন শুয়ে পড়ুন এবং উপভোগ করুন। এই মন্তব্য শুনে যখন হতভম্ব গোটা দেশ, তখন আশ্চর্যজনকভাবে, বিজেপির স্পিকার বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেরি কংগ্রেস বিধায়কের মন্তব্যে আপত্তি করেননি। বরং কাগেরীকে সেই সময় হাসতে দেখা যায়।
রমেশ কুমারের এই মন্তব্যটি গোটা দেশে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। অনেকের দাবি ছিল বিধায়ককে বরখাস্ত করা হোক। এই পরিস্থিতিতে, বিধায়ক শুক্রবার কর্ণাটক বিধানসভায় নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তিনি বলেন কারোর ভাবাবেগে আঘাত করতে তিনি চাননি। গতকাল তিনি যা বলেছেন, তার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। তাঁর মন্তব্যে বিধানসভার সম্মানহানি হয়েছে, তিনি লজ্জিত।
এর আগেও রাজনীতির ময়দানে দুর্নীতিতে তাঁর নাম জড়ানোর সময় নিজেকে ধর্ষিতার সঙ্গে তুলনা করেও বিতর্ক উষ্কে দিয়েছিল রমেশ কুমার। ২০১৯ সালে সালে কর্ণাটক বিধানসভায় থাকাকালীন আরও একটি বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। ওই সময় বিজেপির প্রবীণ নেতা বিএস ইয়েদিউরাপ্পা এবং গেরুয়া শিবিরের অন্যান্য কয়েক জন নেতাদের সঙ্গে একটি বিতর্কিত অডিও ক্লিপে তার নাম উঠে আসে। অভিযোগ সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও শোনা যায়। এদিকে সেই সময় অচিরেই বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে উঠে আসে সে সময়ে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকা এইচডি কুমারস্বামীর স্বামীর নাম। যা নিয়ে বিস্তর চাপানউতর তৈরি হয় কর্নাটকের রাজনীতির ময়দানে। তখনই বড়সড় নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করেন বসেন রমেশ কুমার। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এখন আমার যা অবস্থা তা কোনও ধর্ষিতার থেকে কম নয়।”