সংক্ষিপ্ত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) পঞ্জাব (Punjab) সফর বাতিল হওয়ার পিছনে নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি ছিল না বলেই দাবি মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নির (CM Charanjit Singh Channi)। সরকারি সূত্র অবশ্য অন্য কথা বলছে। 
 

নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির কারণে, বুধবার পঞ্জাবে নিজের কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি ফিরে  যেতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। যা নিয়ে, তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারকে। খোদ প্রধানমন্ত্রীও অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই অবস্থায় এই ঘটনার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি (CM Charanjit Singh Channi)। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এক সূত্রের দাবি, এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। 

বুধবার সন্ধ্যায়, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রি এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীকে ফিরে যেতে হয়েছে বলে তিনি দুঃখিত। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অত্যন্ত সম্মান করেন। তবে, বিক্ষোভের কারণে হুসাইনিওয়ালা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরের এক ফ্লাইওভারের উপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয় প্রায় ২০ মিনিট আটকে থাকার পরও, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী জোরের সঙ্গে দাবি করেছেন, নিরাপত্তার কোনও ত্রুটি ছিল না। 

তবে, কেন্দ্রীয় সরকার তেমনটা মনে করছে না। এমনকী, এমনটা ঘটনা যে ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কে পঞ্জাব প্রশাসন তথা সরকারের কাছে আগাম আভাস ছিল। এমনটাও অনুমান করা করা হচ্ছে। সরকারি ওই সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রধানমন্ত্রী যখন কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সফরে যান, তখন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্য সচিব এবং পুলিশের ডিজি বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে আসেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকেন। এটাই সরকারি প্রোটোকল। এমনকী, প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ে পঞ্জাবের মুখ্য সচিব এবং ডিজিপির জন্য দুটি গাড়িও  সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু অদ্ভূতভাবে, এদিন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রহণ করার জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে ৩ জনের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। 

এর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের অভ্যন্তরে আলোচনা চলছে, কী ঘটতে চলেছে সেই বিষয়ে পঞ্জাবের শীর্ষ আধিকারিকদের কি আগে থেকেই ধারণা ছিল? সেই কারণেই কি তারা প্রধানমন্ত্রীকে গ্রহণ করা বা তাঁর কনভয়ের অংশ হওয়া এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর অবশ্য দাবি, রাজ্যের মুখ্য সচিব কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে যাননি।

সবথেকে বড় কথা হল, প্রধানমন্ত্রীর সময়সূচী এবং ভ্রমণের পরিকল্পনাগুলি পঞ্জাব সরকারকে আগেই জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে, সময়সূচীতে যদি কোনও আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে তার জন্যও পৃথক পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছিল। 

এদিন ভাতিন্ডা বিমানবন্দর (Bhatinda Airport) থেকে হেলিকপ্টারে ফিরোজপুর (Firozpur) যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু বাধ সাধে আবহাওয়া। আকাশে মেঘ ছিল, দৃশ্যমানতা ছিল খুবই কম। তাই, প্রথমে ভাতিন্ডায় অপেক্ষা করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। ২০ মিনিট পরও আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায়, সড়কপথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি কমান্ডোরা। তাদের দাবি, পঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে সড়ক পথে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল। তারপরই রওনা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। কিন্তু, সড়ক পথে যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, তা, প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের পথে বিক্ষোভকারীদের অবরোধেই প্রমাণিত। 
"