৩ তৃণমূল নেতার টিকা নেওয়া নিয়ে বিতর্কটিকা নিলেন বিজেপি সাংসদওপ্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই উঠছে নৈতিকতার প্রশ্নমোদীর ভাষণ শুনে মত বদল করলেন মন্ত্রী

'লাফিয়ে ভ্যাকসিন নিতে চলে গেলেন'। শনিবার ভারতে করোনা টিকাকরণের প্রথমদিনই তৃণমূল বিধায়কদের টিকা নেওয়া প্রসঙ্গে এইভাবেই পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের দলকে আক্রমণ করেছএন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্র কম টিকা পাঠিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ ওই পাল্টা আক্রমণ করেন। কিন্তু, সমস্যা হল এদিন তাঁর দলের এক সাংসদই ভারতের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রথম টিকা গ্রহণ করেছেন।

এদিন ভারতের প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে করোনভাইরাসকে টিকা নেন উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগরের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা মহেশ শর্মা। সকাল ১১ টায় নয়ডা সেক্টর ২৭-এর একটি হাসপাতালে তাঁকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তাঁকে স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীর অগ্রাধিকার গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবেই টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মহেশ শর্মা পেশায় রাজনীতিবিদ হলেও তিনি একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারও বটে। ৬১ বছরের এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হাসপাতালে ৩০ মিনিটের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

পরে ডাক্তার মহেশ শর্মা হিন্দিতে ভাষায় এক টুইট করে জানান, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বের বৃহত্তম টিকাকরণ অভিযান চালু করার সঙ্গে সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারির সূচনা হল। একজন চিকিৎসক হিসাবে আমিও করোনভাইরাস টিকা নিয়েছি। আমি একেবারে সুস্থ বোধ করছি। ভ্যাকসিনটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং আপনাদের সকলের টিকা নেওয়া উচিত।'

Scroll to load tweet…

টিকাকরণ অভিযানের প্রথম দিনই পশ্চিমবঙ্গে টিকা নেন ভাতারের বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল ও প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা এবং কাটোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্য়ায়। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্য়ায়ের দাবি কাটোয়ার পৌরপ্রধান এবং হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যান হিসাবে তিনি সামনে দাঁড়িয়ে কোভিড মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর তাছাড়া অনেকেই টিকা নিতে ভয় পাচ্ছেন, তাই তাদের কে সাহস দেওয়ার জন্য তিনি আগে টিকা নিলেন। সুভাষ মণ্ডল ও বনমালী হাজরারও টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচয় রোগী কল্যান সমিতির সদস্য। প্রত্যেকেরই টিকা গ্রাহকদের তালিকায় নাম ছিল।

চাহিদা অনুযায়ী কোভিড ভ্যাকসিনগুলির সরবরাহ এখনও খুবই কম। তাই টিকাকরণের এই প্রথম দিকে টিকাদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অবস্থায়, রোগী কল্যান সমিতির সদস্য বা ডাক্তারির লইসেন্স থাকলেও অনুশীলন করেন না এমন চিকিৎসকদের আগে টিকা দেওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠছেই। আর এই ক্ষেত্রে জোড়া ফুল থেকে পদ্ম - ফুটছে একেবারে পাশাপাশি। সবার আগে টিকা নেবেন বলে ঘোষণা করেও, এদিন সকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'কড়া নির্দেশ' শোনার পরই কিন্তু মত বদল করেন তেলঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী এতালা রাজেন্দ্র। টিকা নেননি তিনি।