সংক্ষিপ্ত

ওড়িশার এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই নেটমাধ্যমে ব্যপক ভাইরাল হতে থাকে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই ভিডিও চোখে পড়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনেরও।

বাইরে চাঁদিফাটা রোদ, বইছে লু। প্রখর দাবদাহে জনমানবহীন রাস্তাঘাট। তারমধ্যেই রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছেন সূর্য হরিজন। বয়সভারে নুব্জ দেহ, ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না। প্রখর রোদে ভাঙা চেয়ারে ভর করে কোনও মতে ওড়িশার রাস্তায় হেঁটে চলেছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা। সময় মত ব্যাঙ্কে না পৌঁছলে মিলবে না পেনশনের টাকা। টাকা পেলে তবেই চড়বে ভাতের হাড়ি। তাই রোদে গরমে বয়সের ভারে বিধ্বস্ত হয়েও ব্যাঙ্কের পথে যেতে হচ্ছে বৃদ্ধাকে। ওড়িশার এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই নেটমাধ্যমে ব্যপক ভাইরাল হতে থাকে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই ভিডিও চোখে পড়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনেরও। স্বয়ং অর্থমন্ত্রী সেই ভিডিও শেয়ার করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এই প্রবল দাবদাহের মধ্যেও কেন বৃদ্ধাকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ব্যাঙ্কে যেতে হবে সেবিষয়ও উঠেছে প্রশ্ন।

 

 

ওড়িশার একটি ছোট গ্রামের বাসিন্দা সূর্য হরিজন। বয়স ৭০ বছর। ছেলের সংসারেই থাকেন তিনি। পেশায় পশুপালক বৃদ্ধার ছেলে। বৃদ্ধার পেনশনের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল তাঁর পরিবার। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই পেনশনের টাকা নিতে স্টেট ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। কিন্তু আঙুলের ছাপ না মেলায় খালি হাতেই ফিরে আসতে হয় তাঁকে। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, আঙুলের ছাপ না মেলায় আপাতত তাঁর প্রাপ্য ৩০০০ টাকা তাঁকে দেওয়া যাবে না। তিনি যেন কয়েকদিন পর আবার আসেন। সেই মতই ১৭ এপ্রিল ফের স্টেট ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সূর্য। বাড়ি থেকে ব্যাঙ্কের দূরত্ব নেহাতই কম নয়। তাই ভাঙা চেয়ারে ভর দিয়েই কোনও মতে হাঁটছিলেন তিনি। এই ভিডিও রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায় নেটমাধ্যমে।

 

 

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এই ভিডিও শেয়ার করে স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ট্যাগ করে লিখেছেন,'এই বিষয়টি নিয়ে কি স্টেট ব্যাংক একটু মানবিক হতে পারে না?' অর্থমন্ত্রীর টুইটের জবাবও দেয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই বৃদ্ধার আঙুল ভেঙে যাওয়ায় নথিপত্রের সঙ্গে আঙুলের ছাঁপ মিলছিল না। ফলে পেনশনের টাকা তাঁর হাতে তুলে দিতে পারেনি ব্যাঙ্ক। তবে এর পর থেকে সূর্য বাড়িতে বসেই পেনশন পাবেন বলে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। তার জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া। পাশাপাশি বৃদ্ধার হাতে একটি হুইলচেয়ারও তুলে দেবে ব্যাঙ্ক। তবে শুধুমাত্র আঙুলের ছাপ না মেলায় বৃদ্ধার এই ভোগান্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।