সংক্ষিপ্ত

‘নোটবন্দি একটি জঘন্যতম মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’, লিখেছেন সীতারাম ইয়েচুরি। ‘পদক্ষেপটি একটি ‘প্রতারণাপূর্ণ কৌশল’, বক্তব্য তৃণমূল মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েনের।

২০২২-এ এসে নোটবন্দির ষষ্ঠ বার্ষিকী পরিপূর্ণ। ৬ বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের পুরনো টাকা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘সম্পূর্ণ বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দিল দেশের বিরোধী দলগুলি। ২০১৬ সালে, প্রধানমন্ত্রী মোদী উচ্চ-মূল্যের নোট বাতিল করা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। দেশ জুড়ে এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এবং অস্থিরতার জন্ম হয়েছিল।

৮ নভেম্বর, ২০১৬-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পুরনো ১০০০ এবং ৫০০ টাকার সমস্ত নোট বাতিল করার ঘোষণা করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল অর্থপ্রদানের প্রচার এবং সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নগদ টাকা নির্মূল করা। এর পাশাপাশি দেশ জুড়ে কালো টাকা রোধ করা। তারপর থেকে ছয় বছর ধরে, বিরোধীরা এখনও নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে একটি ‘অর্থনৈতিক গণহত্যা’, ‘অপরাধমূলক কাজ’ এবং একটি ‘সংগঠিত লুঠ’ হিসেবে বর্ণনা করে চলেছে।

প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধি নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে বলেছেন যে, ‘এটা "PayPM"-এর একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ ছিল যাতে তার দুই বা তিনজন বিলিয়ন্যয়ার বন্ধু ভারতের অর্থনীতিতে একচেটিয়া রাজত্ব করতে পারে।’

রাহুল গান্ধি হিন্দিতে একটি টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, ‘বিমুদ্রিকরণ করা 'PayPM'-এর একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ ছিল, যাতে তার ধনকুবের বন্ধুদের মধ্যে ২-৩ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা শেষ করে ভারতের অর্থনীতিকে একচেটিয়া করে নিতে পারে।’

কংগ্রেস নেতা মল্লিকারজুন খাড়গে একটি টুইটে বলেছেন, ‘৬ বছর 'সংগঠিত লুঠ এবং বৈধ লুণ্ঠন'। সেই ১৫০ জনের প্রতি শ্রদ্ধা যারা #Demonetisation বিপর্যয়ের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা যখন এই মহাকাব্যিক ব্যর্থতার ৬ বছর পর্যবেক্ষণ করছি, তখন প্রধানমন্ত্রীকে সেই অকল্পনীয় বিপর্যয়ের কথা মনে করিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা তিনি জাতির উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন।”

আরেক বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে নোটবন্দির পদক্ষেপের নিন্দা করে বলেছে, ‘অপরিকল্পিত নীতির ফলে একটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় ঘটেছে - বাজার বিপর্যস্ত হয়েছে, অর্থনীতি হ্রাস পেয়েছে এবং কালো টাকা এখনও ব্যবহার হচ্ছে।’

তৃণমূল মুখপাত্র এবং রাজ্যসভায় দলের বক্তা ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন যে, এই পদক্ষেপটি একটি ‘প্রতারণাপূর্ণ কৌশল’। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘#Demonetisation (নোটবন্দি) আজ থেকে ৬ বছর আগে, একটি মনভোলানো চটক, যা একটি অর্থনৈতিক গণহত্যা হিসাবে পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সালে আমার বই Inside Parliament-এ এর সম্পর্কে লিখেছিলাম।’ ও'ব্রায়েন আরও উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কেন্দ্র সরকারের সম্পর্কে বলেছেন, ‘সমস্ত ভালো বোধ, প্রমাণ এবং পরামর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে, #ডিমোনিটাইজেশন নামক একটা অপরাধমূলক কর্ম করে সরকার নিজের ঢাক পেটাচ্ছে।’

'মোদী শাসনের ষষ্ঠ বার্ষিকী এবং তার সরকারের ঔদ্ধত্য, ভারতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিমুদ্রাকরণের ফলে দেশজুড়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা! জঘন্যতম মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,’ ইয়েচুরি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন।

 

আরও পড়ুন-
দার্জিলিঙে ৯-এর ঘরে নেমে গেল তাপমাত্রার পারদ, বঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই তাপমাত্রা কুড়ির নিচে
গভীর রাতে ভূকম্পের জেরে কেঁপে উঠল রাজধানী, নেপালের কম্পনের প্রভাব পড়ল ভারতেও
‘পশ্চিমবঙ্গ মমতারই থাকবে,’ অনুব্রত-হীন বীরভূমে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভূত প্রশংসায় শতাব্দী রায়