সংক্ষিপ্ত
গোয়েন্দা সূত্রে জানানো হয়েছে, হিজাব বিতর্ক প্রায় ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশেই। এর আঁচ গিয়ে পড়ছে দেশের সর্বত্রই। আর এবার এই বিতর্ক যাতে আরও বড় হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই চেষ্টাই করছে আইএসআই। হিজাব নিয়ে গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপরও জোর দিচ্ছে পাক গোয়েন্দা বাহিনী।
হিজাব ইস্যুকে (Hijab Row) কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে গোটা দেশ। দেশের প্রায় সব প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছে এই বিতর্ক। আর এবার এই বিতর্কে পদক্ষেপ করা শুরু করেছে পাকিস্তানও। কর্নাটকের হিজাব বিতর্কে (Karnataka Hijab Row) এবার পাক যোগের খবর পাওয়া গিয়েছে। কর্নাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তা নিয়ে কয়েকদিন আগেই মুখ খুলেছিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রীরা (Pakistan Minister)। পাল্টা কড়া জবাব দিয়েছেন দেশের রাজনৈতিক নেতারাও। আর এবার এই বিতর্ককে আরও উসকে দেওয়ার জন্য পাকিস্তান পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা বিভাগ আইএসআই (ISI) ভারতের হিজাব বিতর্কে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। খলিস্তানি সংগঠন (Khalistani outfit) শিখস ফর জাস্টিসের (Sikhs For Justice) মাধ্যমে এই বিতর্ককে বৃহত্তর স্তরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
গোয়েন্দা সূত্রে কী জানানো হয়েছে
গোয়েন্দা সূত্রে জানানো হয়েছে, হিজাব বিতর্ক প্রায় ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশেই। এর আঁচ গিয়ে পড়ছে দেশের সর্বত্রই। আর এবার এই বিতর্ক যাতে আরও বড় হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই চেষ্টাই করছে আইএসআই। হিজাব নিয়ে গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপরও জোর দিচ্ছে পাক গোয়েন্দা বাহিনী। ইতিমধ্যেই ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর তরফে কর্ণাটকের পুলিশ ও প্রশাসনকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। শিখস ফর জাস্টিস সংগঠন যাতে হিজাব নিয়ে নতুন কোনও বিতর্ক বা গণভোটের প্রস্তাব না আনে, তার জন্যও কড়া নজরদারি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘ইউনিফর্ম শুধু স্কুলে ব্যবহার হত, কলেজে নয়’, হিজাব মামলায় সওয়াল আইনজীবীর
গোয়েন্দাদের আরও দাবি, এই বিতর্ককে আরও উসকানি দেওয়ার জন্য কিছু দেশবিরোধী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে। ওই সংগঠনের প্রধান গুরুপাতওয়ান্ত সিং পান্নু (Gurupatwanr Singh Pannu) হিজাব নিয়ে গণভোটের আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে। আর এই কাজে তাদের সাহায্য করতে পারে দেশবিরোধীরা। রাজস্থান, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলিকে নিয়ে এই আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
আরও পড়ুন- হিজাব মানেই কি বোরখা, এই দুই শব্দের মধ্যে রয়েছে কী কী পার্থক্য
হিজাব বিতর্ক
বিতর্কের শুরু এক মাস খানেক আগে। উদুপির একটি কলেজে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্লাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এরপর সেই জেলার পরপর চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই ভাবে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করে, হিজাব ছাড়া কলেজে আসতে হবে। সঠিক ইউনিফর্ম পরে তাদের কলেজে যেতে হবে। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। হিজাব বিতর্কের আঁচ গিয়ে পড়েছে রাজনীতিতেও। রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই এই ইস্যুতে আক্রমণ করেছে বিজেপিকে। কেউ রয়েছেন হিজাবের বিরুদ্ধে আবার কেউ হিজাবকে সমর্থন জানিয়েছেন। একাধিক জায়গাতেই এই বিতর্কের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টে একটি পিটিশনও দায়ের করা হয়েছে, যার শুনানি ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি। হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কোনও শিক্ষার্থীকে ধর্মীয় পোশাক পরার জন্য জোর করা উচিত নয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে হবে।
আরও পড়ুন- কর্নাটকের হিজাব ইস্যু এবার পা রাখল বিদেশে, কড়া সমালোচনা করল মার্কিন সংস্থা
তবে এখন আর এই আন্দোলন শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। তা ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকাতেও। হিজাব ইস্যুতে সরব হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) একটি সরকারি সংস্থা। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে স্কুলে বা ক্যাম্পাসে হিজাব নিষিদ্ধ করার অর্থ হল ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থা বিদেশি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নজরদারি করে।