সংক্ষিপ্ত
নীতিশ কুমারের বারবার পাল্টি খাওয়ার অভ্যাস বিহারের রাজনীতিতে তাঁকে পল্টুরামের আখ্যা দেয়। তাই ইতিহাস বলছে বিহারের আটবারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশের জোট থেকে বিচ্ছেদ এই প্রথম নয়।
২০১৫ সালে নীতিশ কুমার ও লালু প্রসাদ যাদবের দল একসঙ্গে লড়াই করে বিহারের ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু বেশিদিন একসঙ্গে থাকেনি। ২০১৭ সালে লালু প্রসাদের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেছিলেন নীতিশ। তার হাত ধরেই বিহারে বিজেপি উজ্জীবিত হয়েছিল। তবে ২০২০ সালে নির্বাচনে নীতিশ ও বিজেপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটে লড়েছিল। কিন্তু সেবছর ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ট দল হয় রাষ্ট্রীয় জনতা দল। নেতৃত্বে ছিলেন মাত্র ৩২ বছরের তেজস্বী যাদব। তাঁরা পেয়েছিলেন ৭৫টি আসন। একটি আসন কম পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি আর ৪৩ আসন পেয়ে তৃতীয় স্থানে পৌঁছে যায় নীতিশ কুমারের জেডিইউ। কংগ্রেসের দখলে ছিল ১৯টি আসন।
নীতিশ কুমারের বারবার পাল্টি খাওয়ার অভ্যাস বিহারের রাজনীতিতে তাঁকে পল্টুরামের আখ্যা দেয়। তাই ইতিহাস বলছে বিহারের আটবারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশের জোট থেকে বিচ্ছেদ এই প্রথম নয়। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব কুমারকে মজা করে "পল্টু রাম" নামে নামকরণ করেছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে নীতিশ বারবার 'ইউ-টার্ন' নিয়েছেন।
২০১৭ সাল
নীতিশ কুমার ২০১৭ সালে আরজেডি-জেডি(ইউ)-কংগ্রেস মহাজোট থেকে বেরিয়ে যান। পরে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তেজস্বী যাদব নীতিশ কুমারকে "গিরগিটির মতো" চরিত্র হিসাবে মন্তব্য করেছিলেন। ভবিষ্যতে তার ধর্মনিরপেক্ষ জোটে ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করেছিলেন।
নীতিশ কুমারের পাল্টি
১৯৯৬ সালে জর্জ ফার্নান্দেজের সাথে সমতা পার্টি গঠনের দুই বছর পর, নীতীশ বিজেপিতে ফেরত আসেন। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী হন।
২০০৩ সালে, শরদ যাদবের সাথে বিচ্ছেদের পর লালু প্রসাদ যাদব আরজেডি গঠন করার কয়েক বছর পর, নীতীশ কুমার তার সমতা পার্টিকে জনতা দলের সাথে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেন। নতুন জোটের নাম জনতা দল (ইউনাইটেড)।
২০১৩ সালে, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে নরেন্দ্র মোদীকে ঘোষণা করার পরে ১৭ বছরের জোটের পর তিনি এনডিএ-র সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। নীতিশ কুমার সেই সময় নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করেছিলেন। বিজেপি মোদীকে শীর্ষ পদের জন্য মনোনীত করায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন নীতিশ ।
২০১৭ সালে, নীতিশ কুমার আরজেডি এবং কংগ্রেসের সাথে একটি মহাজোট গঠন করেন এবং ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ফিরে আসেন। তিনি ২০১৭ সালে আরজেডি-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং রাজ্যে শাসন ব্যবস্থার শ্বাসরোধ করার অভিযোগ এনে মহাজোট থেকে বেরিয়ে যান।
২০২২ সালে, নীতীশ কুমার আবারও বিজেপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন, অভিযোগ করেন যে বিজেপি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং জেডি-ইউ বিধায়কদের তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ফের তিনি হাত ধরেন আরজেডির।