সংক্ষিপ্ত
ফের পেগাসাস স্পাইওয়্যার (Pegasus Spyware) ব্যবহার করে চরবৃত্তি করা নিয়ে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। অথচ, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) পেগাসাস মামলার তদন্তে সহায়তা করতে এগিয়ে এলেন মাত্র ২ জন।
বুধবারই লোকসভায় (Lok Sabha) জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়েছেন কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তিনি অভিযোগ করেন, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি পেগাসাস স্পাইওয়্যার (Pegasus Spyware) ব্যবহার করে জনগণের কন্ঠরোধ করতে চাইছে মোদী সরকার (Modi Govt)। তিনি পেগাসাস প্রসঙ্গ তুলতেই সরকার পক্ষ থেকে আপত্তি জানিয়ে বলা হয়, বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই এই প্রসঙ্গ তিনি লোকসভায় তুলতে পারেন না। যদি সত্যিই এই বিষয়ে তাঁর কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে তাঁকে আদালতের নিযুক্ত কমিটির কাছে ফোন জমা করার উপদেশও দেওয়া হয়। এই অবস্থায় দেখে নেওয়া যাক কোথায় দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) পেগাসাস মামলার বিচার?
ভারতের নাগরিকদের ফোনে বা অন্যান্য ডিভাইসে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সত্যিই চরবৃত্তি করা হয়েছে কিনা, তা নির্ধারণের জন্য, ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর একটি প্রযুক্তিগত কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটি চলতি বছরের ২ জানুয়ারী, একটি পাবলিক নোটিশ জারি করে বলেছিল, যাঁরা সন্দেহ করছেন, তাঁদের মোবাইল ফোনে বা অন্য কোনও যন্ত্রে ইসরাইলি এনএসও গ্রুপের (Israeli NSO Group) তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হয়েছে, তারা যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে কমিটির কাছে তাঁদের মোবাইল ফোনটি জমা করতে। কমিটি আরও জানিয়েছিল, অভইযোগকারীর উপস্থিতিতে যন্ত্রটির একটি ডিজিটাল চিত্র নেওয়া হবে। তারপর অবিলম্বে ডিভাইসটি ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ওইি ব্যক্তিকে ডিজিটাল চিত্রের একটি অনুলিপিও দেওয়া হবে। এর জন্য একমাস সময় দেওয়া হয়েছিল।
আদালতের তথ্য বলছে, সেই এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত, স্পাইওয়্যার নজরদারির সন্দেহ প্রকাশ করে মাত্র দু'জন ব্যক্তি তাদের যন্ত্র নিয়ে প্যানেলের সামনে উপস্থিত হয়েছেন। ওই দুই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার, আদালত নিযুক্ত প্রযুক্তিগত কমিটি, ফের একবার ওই একই পাবলিক নোটিশ জারি করেছে। যন্ত্র নিয়ে কমিটির সামনে হাজির হওয়ার মেয়াদ বাড়িয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। এই কমিটি শুধু, এই মোবাইল ফোন বা যন্ত্রগুলিই পরীক্ষা করে দেখছে না, একই সঙ্গে, ভারতের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য কেন্দ্র বা কোনও রাজ্যের সরকার পেগাসাস স্যুট অধিগ্রহণ করেছিল কিনা তাও পরীক্ষা করছে। পাশাপাশি কোনও সরকারী সংস্থা নাগরিকের উপর পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে কিনা এবং করে থাকলে তা কোন আইন, নিয়ম, নির্দেশিকা, প্রোটোকল বা আইনানুগ পদ্ধতি মেনে করা হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখব এই কমিটি।
২০২১ সালে লোকসভার বাদল অধিবেশন উত্তাল হয়েছিল পেগাসাস নজরদারির অভিযোগ নিয়ে। চলতি বাজেট অধিবেশনের ঠিক আগে আবার নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০১৭ সালে ইসরাইল সফরে গিয়েই পেগাসাস অধিগ্রহণের বিষয়ে চুক্তি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা নিয়ে ফের সুর চড়িয়েছে বিরধীরা। কিন্তু, এর অভিযোগের যদি সত্যিই কোনও বাস্তবতা থাকে, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের তদন্তে সহায়তা করতে এতদিনে মাত্র ২ জন এগিয়ে এলেন কেন? রাহুল গান্ধী থেকে প্রশান্ত কিশোর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় - অনেকেই তো এই বিষয় নিয়ে অভিযোগে গলা মিলিয়েছিলেন। তাঁরা এখন কোথায়, প্রশ্ন উঠছেই।