সংক্ষিপ্ত
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন এই জয় বিজেপি-র কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল কংগ্রেসকে বর্গিজের দল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলটি ভোটলুঠের একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করেছিল।
রবিবার ত্রিপুরার (Tripura) পুরনির্বাচনের ফলাফল (Vote Result) প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে একচ্ছত্র ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি (BJP)। ৩৩৪টি আসনের মধ্যে ৩২৯টি আসনেই জয় লাভ করেছে গেরুয়া শিবির। যা বিরোধী দল হিসেবে বামফ্রন্টের ধ্বংসের ইঙ্গিত দিয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসকেও (TMC) ধরাসায়ী করেছে। কারণ মাত্র তিনটি আসন পেয়েছে বামেরা। আর তৃণমূলের দখলে মাত্র ১টি আসন। এই জয়ের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা ত্রিপুরার বিজেপি নেত্রী প্রতিমা ভৌমিক (Pratima Bhoumick) এশিয়ানেট নিউজেকে জানিয়েছেন ত্রিপুরার বাসিন্দারা তৃণমূলের 'খেলা হবে' স্লোগানকে পুরোপুরি বর্জন করেছে। তিনি আরও বলেছেন ত্রিপুরার মানুষ শান্তিপ্রিয় আর তাঁরা উন্নয়ন চায়। তিনি আরও বলেছেন রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষও বিজেপির সঙ্গে রয়েছে।
পুর নির্বাচনে বিজেপি জয়ের কারণঃ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন এই জয় বিজেপি-র কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল কংগ্রেসকে বর্গিজের দল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলটি ভোটলুঠের একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করেছিল। ২০২১ সালে এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনার সাক্ষী ছিল। অনেক নারী ধর্ষিত হয়েছিল। বিজেপি লক্ষাধিক কর্মী বাড়ি ছাড়া রয়েছে। এই অবস্থায় ত্রিপুরায় বিজেপির জয় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাক স্বাধীনতা নেই। পশ্চিমবঙ্গে যেসব তৃণমূল কর্মীরা হিংসার ঘটনায় যুক্ত তৃণমূল কর্মীরা ত্রিপুরাকে অশান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছিল। ত্রিপুরার পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা এই রাজ্যে প্রবেশ করেছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাই ২৮ নভেম্বর জনগণেতের রায় রাজ্যেকে খারাপ ভাবমূর্তি হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
প্রতিমা ভৌমিকের কথায় ত্রিপুরা একটি ছোট রাজ্য। কিন্তু সেই ছোট রাজ্যটিকে দখল করার সবরকম চেষ্টা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা রাজ্যকে কুঁয়োর ব্যাঙেরস সঙ্গেই তুলনা করেছিল। একই সঙ্গে তৃণমূল ঘোষণা করেছিল যদি তৃণমূলের কোনও সদস্যের গায়ে হাত পড়ে তাহলে তার বদলা নেওয়া হবে বাংলায়। বাংলায় ৫০০ বিজেপি কর্মীকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গুন্ডা আর হিংসা দিয়ে বিজেপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল।তৃণমূল কংগ্রেস কী বলছে, কী করছে-সবই লক্ষ্য রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু দলের কেউ তৃণমূলের পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বিজেপির ডিএনএ-তে গুন্ডামি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিজেপি জাতীয়তাবাদ, রাষ্ট্রবাদ আর উন্নয়নকে হাতিয়ার করে লড়াই করেছিল। বিজেপি কর্মীরা সকলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে থেকে লড়াই করেছে।
তৃণমূলের তোলা কারচুপির অভিযোগঃ
নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যা বলে তা সত্য নয়, বলেও দাবি করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন যারা অসাধু (তৃণমূল কংগ্রেস) হয় তারা সকলকেই খারাপ বলে মনে করে। আর সাধু (বিজেপি) সকলকেই সাধু বলে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস কী ভাবে জিতেছে তা সকলেই জানে। সেখানের মিডিয়ার স্বাধীনতা নেই। ত্রিপুয়া অবাধে ভোট হয়েছে। আর তৃণমূলও সোনামুড়া আর আগরতলায় ১০০ শতাংশ প্রার্থী দিতে পেরেছে। তবে বেশ কয়েকটি জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে বিজেপি যদি কোনও জালিয়াতি করত তাহলে এজাতীয় ফলাফল হত না। তিনি আরও বলেন বিজেপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। বিজেপির প্রশাসনে উৎশৃঙ্খলতার কোনও স্থান নেই।
জনতার রায়ঃ
এই রায় পুরোপুরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তারা ত্রিপুরায় এসে 'খেলা হবে' স্লোগান তুলেছিল। তিনি আরও বলেন বিজেপি কোনও ফুটবলার নয়। ত্রিপুরার মানুষও ফুটবল নয়। 'আমরা মানুষ'। তৃণমূলের স্লোগানে পশ্চিমবঙ্গে খেলা হবে বলা হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে লক্ষ লক্ষ নারী নির্যাতিত হয়েছে। অনেক মানুষকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, মানুষ কথা বলার স্বাধীনতা হারিয়েছিল। এখন এটাই পশ্চিমবঙ্গের 'খেলা হবে'। তবে ত্রিপুরায় বিজেপি জনগণের বিরুদ্ধে এভাবে খেলতে দেবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন ত্রিপুরার মানুষ আত্মসম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চায়য উত্তর পূর্ব ভারতের জনগণ অনেক বেশে আবেগপ্রবণ। তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁদের সেই ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি নেত্রী। তিনি আরও বলেন মানুষের রায় স্পষ্ট করে দিয়েছে তারা তৃণমূলকে বর্জন করেছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৬১ শতাংশো ভোট পেয়েছিল। আর পুরনির্বাচনে বিজেপির ভোট মাত্র ২ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৯ শতাংশ। এটাই বলে দেয় রাজ্যের মানুষ বিজেপির সঙ্গে রয়েছে।
বিজেপি সকলের জন্য কাজ করবে। সকলের উন্নয়ন চায়। এই স্লোগান তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই স্লোগান ত্রিপুরায় কার্যকর করা হয়েছে। কারণ সোনামুড়া, আগরতলাসহ রাজ্যের অধিকাংশ বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। নতুন ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
ত্রিপুরার জনতার রায়ের প্রভাব অন্য রাজ্যেঃ
ত্রিপুরার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের ভুয়ো খবর প্রচার করা হয়েছিল।ত্রিপুরায় কোনও মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসই গোটা বিশয়টিকে জাতীয় ইস্যু তৈরি করেছে। তিনি বলেন ত্রিপুরার ভোটের প্রভাব পড়তে পারে উত্তর প্রদেশে। কিন্তু ত্রিপুরাতে যদি সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হত তাহলে কি তারা বিজেপিকে ভোট দিত- এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
IPL 2022: ধোনি,কোহলি,শর্মা খেলবেন পুরনো দলেই, চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন আরও ক্রিকেটার
Visa vs RuPay: রুপে কার্ডের জনপ্রিয়তায় উদ্বেগ , মার্কিন সরকারের কাছে নালিশ ভিসা কার্ডের
TMC: জাতীয় রাজনীতিতে কি 'একঘরে' তৃণমূল, নাম নেই ১২ সাংসদ সাসপেন্ডের যৌথ বিবৃতিতে