সংক্ষিপ্ত


নীতা অম্বানিকে প্রণাম করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ভুয়ো ছবি পোস্ট করেছিলেন জহর সরকার

মুহূর্তে মোদী ভক্তদের আক্রমণের মুখে প্রসার ভারতীয় প্রাক্তন সিইও

ওই ছবিটি সরিয়ে দিলেও জহর পোস্ট করলেন আরেক বিস্ফোরক ছবি 

নীতা অম্বানি হাসছেন। আর ঠিক তাঁর পাশে হাতজোড় করে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার এমনই একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন প্রসার ভারতীয় প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। কিন্তু, মোদী ভক্তরা মুহূর্তের মধ্য়ে ধরিয়ে দিলেন ছবিটি ভুয়ো। বস্তুত, অন্য এক মহিলার মুখের জায়গায় নীতা অম্বানির মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ভুল ধরা পড়ে যাওয়ার পর, নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রবল সমালোচক জহর সরকার ভাঙলেন, তবু মচকালেন না। পোস্ট করলেন আরও একটি বিস্ফোরক ছবি।      

এদিন, হাস্যরত নীতা অম্বানির সামনে জোড়হাতে নতমস্তকে নরেন্দ্র মোদীর দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটি পোস্ট করে সঙ্গের ক্যাপশনে প্রসার ভারতীয় প্রাক্তন সিইও ক্যাপশনে কটাক্ষের সুরে লেখেন, সাংসদ এবং রাজনীতিতে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিবর্গও যদি তাদের সবসময় খারাপ ব্যবহার করা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন সৌজন্য এবং সখ্যতা পেতেন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রে, দ্বি-মুখী সম্পর্কে কীভাবে পক্ষপাত, এবং লেনদেন চলে তা সকলের জানা। কোন এক দিন, ইতিহাস বলবে।

জহর সরকারের টুইট করা পোস্ট, যা পরে তিনি ডিলিট করে দেন

জহর সরকারের এই টুইট, নেট জগতে পৌঁছনো মাত্র, মোদী-ভক্তরা ধরিয়ে দেন ছবিটি মর্ফড, অর্থাৎ কারিকুরি করে বানানো ছবি। আসল ছবিটি পোস্ট করে তাঁরা ধরিয়ে দেন, নরেন্দ্র মোদী মাথা মত করেছিলেন যাঁর সামনে, তিনি নীতা অম্বানী নন, ছবির ভদ্রমহিলার দীপিকা মন্ডল। তিনি একটি এনজিও পরিচালনা করেন। তাঁর সামাজিক কাজে মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী ওই মহিলাকে উপযুক্ত সম্মান দিয়েছলিন।

এমনকী প্রসার ভারতীর বর্তমান সিইও, শশী এস-ও প্রাক্তনকে, তাঁর টুইট নিয়ে কড়া আক্রমণ করেনি। শশী এস, জহর সরকারের টুইটটি তুলে ধরে লেখেন, পাবলিক ব্রডকাস্টারের একজন প্রাক্তন সিইও এবং প্রাক্তন সংস্কৃতি সচিব এইভাবে জাল ছবি প্রচার করছেন, এটা লজ্জাজনক। তিনি আরও বলেন, একজন ব্যক্তির কাউকে পছন্দ নাই হতে পারে, তাই বলে এভাবে মর্ফড ছবি প্রচার করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি আরও বলেন, প্রাক্তন সিইও-র এই কাজে প্রসার ভারতী বিব্রত।

এইসব আক্রমনের মুখে পড়ে টুইটটি ডিলিট করে দেন জহর সরকার। তবে তাঁর অবস্থান বা বক্তব্য পাল্টাননি তিনি। প্রথম টুইট ডিলিট করার কিছু পরেই তিনি আরও একটি ছবি টুইট করেন। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী, এরহাতে পাকড়েছেন নীতা অম্বানির হাত, অন্যহাতে মুকেশ অম্বানি। তিন জনেই হাসছেন। অদ্ভূত বিষয় এই ছবিটি থেকেই, আগের মর্ফড ছবিটিতে নীতা অন্বানীর মুখ বসানো হয়েছিল। সঙ্গের ক্যাপশনে প্রকারান্তরে তিনি এর আগে ভুয়ো ছবি পোস্ট করার বিষয়টি মেনে নিয়েছন। সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, ওই ভুয়ো ছবি পোস্ট করার পর তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছে।

ছবিগুলি ভুয়ো বলে মেনে নিলেও, বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে যা ভুয়ো নয়। কী কী সেগুলি? গুজরাতের ধনীতম পরিবারে (অম্বানী) সঙ্গে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর) গভীর বন্ধন, মোদীর শাসনকালে তাদের অবিশ্বাস্যরকম বৃদ্ধি এবং তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সক্ষতা। ফ্রেডরিক ফোরসাইথের ক্লাসিক উপন্যাস 'ডগস অফ ওয়ার'-এর উল্লেখ করে জহর সরকার প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, এখন যুদ্ধের কুকুররা কি এবার ঘেউ ঘেউ করা শুরু করবে?

জহর সরকারের পোস্ট করা এই ছবিটি আসল না নকল, তা এখনও যাচাই করা যায়নি