PM Modi cautions BJP leaders: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এনডিএ নেতাদেরকে অপারেশন সিন্দুর এবং পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
PM Modi cautions BJP leaders: ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা বিজেপি নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কড়া বার্তা দিয়েছেন। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এনডিএ শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে মোদী স্পষ্ট করে বলেছেন, নেতাদের প্রতিটি বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
প্রতিটি বিষয়ে মন্তব্য করবেন না: মোদীর স্পষ্ট বার্তা
বৈঠকে মোদী নেতাদের অযথা বিতর্কিত মন্তব্য না করার পরামর্শ দিয়েছেন কারণ এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে দলকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বিতর্কের সূত্রপাত: বিজয় শাহ এবং রাম চন্দ্র জাংড়ার মন্তব্য
মধ্যপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী বিজয় শাহ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনা মুখপাত্র কর্নেল সোফিয়া কুরেশীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, যা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল এবং বিচার বিভাগ ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। শাহ কর্নেল সোফিয়াকে সন্ত্রাসবাদীদের বোন বলেছিলেন। একইভাবে উপ-মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেবড়া বলেছিলেন যে, সমগ্র দেশ, দেশের সেনাবাহিনী এবং সেনারা প্রধানমন্ত্রী মোদীর চরণে নত। দেবড়া তার বক্তব্যে বলেছিলেন যে, যেসব পর্যটকদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে হত্যা করা হয়েছে, তাতে মনে প্রচণ্ড ক্রোধ জন্মেছে। মহিলাদের এক পাশে দাঁড় করিয়ে তাদের সামনে গুলি করা হয়েছে। বাচ্চাদের সামনে গুলি করা হয়েছে। সেই দিন থেকেই সমগ্র দেশের মনে উত্তেজনা ছিল যে, যতক্ষণ না এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে, যতক্ষণ না যারা মায়েদের সিঁদুর মুছে ফেলার কাজ করেছে তাদের মেরে ফেলা হবে, ততক্ষণ শান্তির নিঃশ্বাস নেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই। সমগ্র দেশ, দেশের সেনাবাহিনী, সেনা তার চরণে নত। তিনি যে জবাব দিয়েছেন, তার যত প্রশংসা করা হোক না কেন, তা কম।
বীরাঙ্গনার ভাব ছিল না…
একইভাবে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রাম চন্দ্র জাংড়া হরিয়ানার ভিওয়ানিতে এক অনুষ্ঠানে ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহতদের স্ত্রীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। জাংড়া বলেছিলেন, যাদের সিঁদুর ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে বীরাঙ্গনার ভাব ছিল না। মহিলাদের সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াই করা উচিত ছিল, যদি তারা হাত জোড় করার পরিবর্তে প্রতিরোধ করতেন, তাহলে কম লোক মারা যেত। তিনি বলেছিলেন: যেসব মহিলারা তাদের স্বামীকে হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে উদ্যম, উৎসাহ এবং যোদ্ধা-মনোভাবের অভাব ছিল... আমাদের লোকেরা হাত জোড় করে মারা গেছেন। যদি সেই পর্যটকদের অগ্নিবীরের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, তাহলে তিনজন সন্ত্রাসবাদী ২৬ জনকে মেরে ফেলতে পারতো না।
রানি লক্ষ্মীবাইও মহিলা ছিলেন…
যখন জাংড়াকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তিনি কীভাবে মহিলাদের কাছ থেকে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াই করার আশা করতে পারেন, তখন তিনি জবাব দিয়েছিলেন: অহল্যাবাই হোলকার এবং রানি লক্ষ্মীবাইও মহিলা ছিলেন। তারা কি যুদ্ধ করেননি? আমরা চাই আমাদের বোনেরা সাহসের সঙ্গে বাঁচুক।
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষোভ এবং সংগঠনের উদ্বেগ
কর্নেল সোফিয়ার প্রতি করা মন্তব্যে কেবল সেনাবাহিনীর মর্যাদাই ক্ষুন্ন হয়নি, সুপ্রিম কোর্টও এটিকে জনজীবনে অনুশাসনহীনতা বলে অভিহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এখন দলের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
নির্বাচনের আগে ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ
যেহেতু কয়েক মাসের মধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং কেন্দ্র সরকারের সামরিক কার্যক্রম ‘অপারেশন সিঁদুর’কে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, তাই দলীয় নেতাদের অসংবেদনশীল এবং ভুল বক্তব্যের ফলে জনগণের মধ্যে ভুল বার্তা যেতে পারে।


