সংক্ষিপ্ত
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার ঘটনা যে বিজেপি সহজভাবে মেনে নিচ্ছে না তা ইতিমধ্যেই তাদের অবস্থান থেকে পরিস্কার হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে তাঁদের মঞ্চের অধিনে থাকা কয়েকটি কৃষক সংগঠনের বিক্ষোভের জেরে যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে তা মানতে রাজি নয় সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চা।
পঞ্জাব সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার ঘটনায় এবার তদন্তের দাবি তুললেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধভ ঠাকারে। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাওয়াত এক টুইটার পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে টুইটারে দলমত নির্বিশেষে সকলেই সরব হয়েছেন। এমনকী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়াও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেছেন।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকও এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতো দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক প্রধানের নিরাপত্তায় এমন গাফিলতি কীভাবে হতে পারে তাতেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিঘ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী রাষ্ট্রপতি ভবনে যান রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সেখানেও এই নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত আকারে বুধবারের ঘটনা সবিস্তারে রাষ্ট্রপতির সামনে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে রাজনীতিতে সায় নেই অধিকাংশ রাজনৈতিক দলেরই। এইসব রাজনৈতিক দলের মতে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাকে লঙ্ঘন করে অবরোধের এই বিষয়গুলো মানা যায়না। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাওয়াতের টুইটার পোস্টেও একই সুর ধ্বনিত হয়েছে। সঞ্জয় লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীরা হলেন দেশের সম্পদ। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করা যায় না। যেভাবে পঞ্জাব সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতি সামনে এসেছে তা প্রবল উদ্বেগের। এই ধরনের গাফিলতির জন্য দেশ তার ২ জন প্রধানমন্ত্রীকে হারিয়েছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত। এমনই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধভ ঠাকরে।'
এদিকে, বায়ুসেনার প্রাক্তন পাইলট অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়ার্ডেন লিডার বিনোদ কুমার তাঁর একটি টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ভয়ডরহীন মানুষ। তিনি তাঁর টুইটার পোস্টে লিখেছেন, 'অত্যন্ত কাছ থেকে তাঁর সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়েছি। একটা কথা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি। তিনি ভয়কে পাত্তা দেন না। তিনি দেশের জন্য আরও ভালোবাসাকে সঙ্গী করে শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবেন। তিনি সেই মানুষ যাকে আমি আমার প্রধানমন্ত্রী বলে মানি। ভগবান আপনার মঙ্গল করুক প্রধানমন্ত্রী মোদী। আপনার সুস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য সবসময়ে প্রার্থনা করি- জয় হিন্দ'
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার ঘটনা যে বিজেপি সহজভাবে মেনে নিচ্ছে না তা ইতিমধ্যেই তাদের অবস্থান থেকে পরিস্কার হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে তাঁদের মঞ্চের অধিনে থাকা কয়েকটি কৃষক সংগঠনের বিক্ষোভের জেরে যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে তা মানতে রাজি নয় সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চা। তাদের সাফ উত্তর- প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের থেকে অনেক দূরে ছিলেন বিক্ষোভকারী কৃষ্কদের দল। প্রধানমন্ত্রীর কনভয় থমকে যেতে তাঁর গাড়ির সামনে যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তারা বিজেপি কর্মী। এরাই বিজেপি-র পতাকা কাঁধে করে জয়-মোদী, মোদী জিন্দাবাদ বলতে বলতে কনভয়ের সামনে চলে গিয়েছিল। এটা ভিডিও-তে পরিস্কার ধরা পড়েছে বলে দাবি করেছে সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চা।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি-র এক প্রতিনিধি দল। এমনকী সন্ধ্যায় জেলায় জেলায় মোমবাতি মিছিলও করেন বিজেপি কর্মীরা।