সংক্ষিপ্ত

প্রায় ৫০০ বছর গুজরাটে যখন সুলতান মাহমুদ বেগদার আক্রমণ করেছিলেন তখন মন্দিরের শিখারা বা চূড়াটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পাভাগড় পাহাড়ে অবস্থিত ১১ শতকের এই মন্দিরটি নতুন করে মেরামতি করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও বিশ্বাস অগাধ আর দৃঢ় থাকে। শনিবার গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার বিখ্যাত মহাকালী মন্দিরের একটি ঐতিহ্যবাহী পতাকা উত্তোলন করে এমনটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মন্দিরটি প্রায় ৫০০ বছর পুরনো। মাস খানেক আগে  এটি একটি দরগার কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এদিন আরও বলেন যে ভারতের আধ্যাত্মিক গৌরবের কেন্দ্র ও মন্দিরগুলি পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। 

প্রায় ৫০০ বছর গুজরাটে যখন সুলতান মাহমুদ বেগদার আক্রমণ করেছিলেন তখন মন্দিরের শিখারা বা চূড়াটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পাভাগড় পাহাড়ে অবস্থিত ১১ শতকের এই মন্দিরটি নতুন করে মেরামতি করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরটির নবনির্মাণের পরই একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্দিরের ধ্বজা উত্তোলন করেন। মন্দিরেরযে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে যা কেবল ভারতের আধ্যাত্মিক প্রতীক নয় - এমনটাই দাবি করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, এটি প্রধান করে যে বহু বছর , বহু যুগ পরেও ভারতীয়দের বিশ্বাস চিরন্তন থাকে। মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ ভক্তের স্বপ্ন আজ পুরণ হয়েছে বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রাচীনকাল মন্দিরটি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল এখনও সেখানে একই ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু মন্দিরের সাজ পরিবর্তন হয়েছে। মোদী বলেন, 'স্বপ্ন দেখা এক জিনিস। কিন্তু তার ধারনা করা ভিন্নি। কিন্তু আপনি যখন দেখেন আপনার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হচ্ছে তখন তা একটা সন্তোষজনক অনুভূতি দেয়।' তিনি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন অযোধ্যায় একটি বিশাল রাম মন্দির নির্মাণ হয়েছে। কাশী বিশঅবনাথ মন্দির কমপ্লেক্স ইতিমধ্যেই পুননির্মাণ করা হয়েছে। কেদারনাথের মন্দিরের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আমাদের বিশ্বাসের কেন্দ্র ভারতের আধ্যাত্মিত গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাভাগড়ে মা কালী মন্দির নির্মাণ এই গৌরব যাত্রার অংশ।'  আধ্যাত্মিক স্থানগুলিকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে ধর্মীয় পর্যটন বিকাশের পরিকাঠামো  উন্নয়ন করা কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বড় লক্ষ্য বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন পাভাগড-চাপনের এই ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইটটি আগামী দিনে পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে। 

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন কেন্দ্র চারধাম যাত্রার জন্য উত্তরাখণ্ডের পরিকাঠামো তৈরির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই বছরই দর্শনার্থীদের জন্য তা খুলে গেওযা হয়েছে। কেদার -বদ্রীনাথে আসা বিপুল সংখ্যক ভক্তের সুবিধে হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। 


মন্দিরের মূল চূড়াটি ১৫ শতকে সুলতান মাহমুদ বেগাদা চম্পানের আক্রমণের সময় ধ্বংস করেছিলেন বলে  মন্দিরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এর পরে, মন্দিরের চূড়ায় একজন মুসলিম সাধক সাদানশাহ পীরের একটি দরগাহ বা মাজার তৈরি করা হয়েছিল। “একটি পতাকা উত্তোলনের জন্য  একটি খুঁটির প্রয়োজন হয়। কোন চূড়া না থাকায় এত বছর কোন পতাকা লাগানো হয়নি। কয়েক বছর আগে যখন পুনর্নির্মাণ শুরু হয়েছিল, আমরা দরগাহের তত্ত্বাবধায়কদের অনুরোধ করেছিলাম যাতে এটি স্থানান্তরিত হতে পারে। মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করা যায়,” । তিনি আরও বলেছেন, "আমাদের একটি বন্ধুত্বপূর্ণ বন্দোবস্ত ছিল এবং দরগাহটিকে মন্দিরের কাছাকাছি একটি জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, তারপরই মন্দিরটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে" বলেও জানিয়েছেন তিনি।