সংক্ষিপ্ত
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আড়াই হাজার সিআরপিএফ কর্মী নিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশে যাচ্ছিল কনভয়। রাস্তায় ২২ বছর বয়সী আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমের দার বেলা তিনটের দিকে একটি মারুতি ঢুকিয়ে দিয়েছিল কনভয়ের মধ্যে।
২০১৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি। গোটা দেশ যখন ভালবাসার মানুষকে মনের কথা বলতে ব্যস্ত, সেই সময় জম্মু কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) পুলওয়ামায় (Pulwama) সিআরপিএফের কনভয়ে মারণঘাতী হামলা চালিয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদ (Pulwama terror attack 3rd anniversary)। পাক মদতপুষ্ট আত্মঘাতী দল আক্রমণ করেছিল দেশের বীর সন্তানদের ওপরে। চোখের নিমেষে ঝরে গিয়েছিল ৪০টা তাজা প্রাণ (40 CRPF jawans)। কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের ৪০ জওয়ান নিহত হয়েছিল।
পুলওয়ামা হামলা কীভাবে ঘটেছিল
অবন্তিপোরার কাছে লেথপোরায়, বিকাল তিনটে বেজে পনেরো মিনিট নাগাদ, নিরাপত্তা রক্ষীদের কনভয়ে, আইইডি বোঝাই একটি গাড়ি নিয়ে হামলা চলে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আড়াই হাজার সিআরপিএফ কর্মী নিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশে যাচ্ছিল কনভয়। রাস্তায় ২২ বছর বয়সী আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমের দার বেলা তিনটের দিকে একটি মারুতি ঢুকিয়ে দিয়েছিল কনভয়ের মধ্যে। তাতেই বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়েগিয়েছিল সিআরপিএর সদস্যদের একটি বাস। দুর্ঘটনার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিহত হয়েছিল ৪০ জওয়ান। প্রশাসনের কথায় উপত্যকার ৩০ বছরের সবথেকে ভয়াবহ ঘটনা ছিল এটি।
দায় স্বীকার করে জইশ
পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। তারা কাকাপোরার বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী আততায়ী আদিল আহমেদ দারের একটি ভিডিও প্রকাশ করে যে এক বছর আগে এই গ্রুপে যোগ দিয়েছিল। সেখান থেকেই গোটা ঘটনা সামনে আসে।
ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতি
হামলার পর, পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেবারড নেশন তকমা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। হাতে নয়, ইসলামাবাদকে ভাতে মারতে সবরকম প্রস্তুতি নেয় নয়াদিল্লি। ভারতে আমদানি করা সমস্ত পাকিস্তানি পণ্যের উপর শুল্ক ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ভারত সরকার ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স অন মানি লন্ডারিং (এফএটিএফ)-কে পাকিস্তানকে কালো তালিকায় রাখার আহ্বান জানায়। ১৭ই ফেব্রুয়ারি, জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে।
বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক
পুলওয়ামা হামলার প্রায় ১২ দিন পর ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক চালিয়েছিল। ভারতের দাবি বিমান হামলায় তছনছ করে দেওয়া হয়েছিল সীমান্ত লাগোয়া জইস ই মহম্মদের ঘাঁটি। পাল্টা পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে ভারত উপত্যকার নিরাপত্তা আরও বাড়িয়েছিল। মোতায়েন করা হয়েছিল কয়েক হাজার সেনা।
প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি সংগঠন জইস ই মহম্মদ। হামলায় ব্যবহৃত জিনিসগুলি থেকে পাওয়া গিয়েছ তারমধ্যে ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, নাইট্রোগ্লিসারিন, অরডিএক্স। তদন্তে নিহত আত্মঘাতী জঙ্গির সঙ্গে তার বাবার ডিএনও মিলিয়ে দেখা গেছে। ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব ছিল জাতীয় তদন্ত সংস্থার হাতে। হামলার জন্য ব্যবৃত গাড়িটিরও ফরেনসিক হয়েছিল। ২০২০ সালে পুলওয়ামা হামলায় জড়িত জইশ ই মহম্মদের এক অপারেটরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।