সংক্ষিপ্ত
পঞ্জাব বিধানসভা (Punjab Elections 2022) নির্বাচনের ঠিক আগে গুরমিত রাম রহিমকে (Gurmeet Ram Rahim) ফার্লো দিল হরিয়ানার (Haryana) বিজেপি (BJP) সরকার। এর পিছনে পরিষ্কার রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আসন্ন পঞ্জাব বিধানসভা (Punjab Elections 2022) নির্বাচনে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে ডেরা সাচ্চা সৌদা (Dera Sacha Sauda)। বিশেষ করে রাজ্যের কংগ্রেস (Congress) প্রধান নভজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu), বারবার করে ধর্ষণ সহ তিনটি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত গুরমিত রাম রহিমের (Gurmeet Ram Rahim) ডেরাকে ধর্মবিশ্বাসের প্রেক্ষিতে বারবার আক্রমণ করে তার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি পাঞ্জাব পুলিশের (Punjab) পক্ষ থেকেও একটি চার্জশিটে রাম রহিমের নাম রাখা হয়েছে। আর এরই মধ্যে রাম রহিমকে ২১ দিনের ছুটি বা ফার্লো দিল হরিয়ানার (Haryana) বিজেপি (BJP) সরকার। যার পিছনে পরিষ্কার রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২১টি দিনের জন্য ফার্লো পাচ্ছে ডেরা প্রধান
বর্তমানে হরিয়ানার রোহতকের (Rohtak) সুনারিয়া জেলে (Sunaria Jail) বন্দি রয়েছে গুরমিত রাম রহিম। ২০১৭ সালে দুই অনুগামীকে ধর্ষণ এবং হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে এই জেলেই আছে সে। পরবর্তীকালে, একটি বিশেষ সিবিআই আদালত ডেরার প্রাক্তন ম্যানেজার রঞ্জিত সিং-কে হত্যার দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ডেরা প্রধানের ৩১ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছে রাম রহিম। সোমবার সন্ধ্যাবেলাই তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। তবে এই মুক্তি চিরতরে নয়, মাত্র ২১টি দিন সে বাড়িতে থাকতে পারবে।
রাম রহিমের ছুটিতে বিজেপির লাভ
পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাম রহিমের ফার্লো পাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক স্বার্থ আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে রাম রহিম তিনবার ফার্লো এবং প্যারোলের আবেদন করেছিল, কিন্তু প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। পঞ্জাবে এই প্রথম বিজেপি একক বড় দল হিসেবে নির্বাচনে লড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে গুরমিত রাম রহিমের ফার্লো পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতির বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গুরমিত রাম রহিমকে ফার্লো দেওয়া পাঞ্জাবে বিজেপিকে সুবিধা দিতে পারে। কারণ, গুরুতর অপরাধের আসামী হওয়া সত্ত্বেও পাঞ্জাবে এখনও প্রচুর ডেরা সমর্থক রয়েছেন। কংগ্রেস যেভাবে ডেরার ধর্মবিশ্বাকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে, তাতে ডেরা সমর্থকরা কংগ্রেসের প্রতি ক্ষুব্ধ। আর ক্ষোভকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।
ফার্লো এবং প্যারোলের মধ্যে পার্থক্য
জেলবন্দিরা দুইভাবে স্বল্পসময়ের জন্য বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। একটি হল প্যারোল, অপরটি ফার্লো। সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্ট এই দুই ব্যবস্থার পার্থক্য এবং সেগুলি মঞ্জুর করার সঙ্গে সম্পর্কিত বিশয়গুলি ব্যাখ্যা করেছে। আদালত বলেছে, একজন বন্দীকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারাগারে থাকার পর, তাদের একঘেয়েমি ভাঙাতে ফার্লো দেওয়া হয়। বন্দীকে কয়েকদিনের জন্য সামাজিক ও পারিবারিক সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। আর, প্যারোল ব্যবস্থায় কোনও নির্দিষ্ট প্রয়োজনের ভিত্তিতে যে কোনও সময়ই কোনও বন্দীকে মঞ্জুর করা যেতে পারে। তবে, দুটির কোনও ক্ষেত্রেই একজন কয়েদীর পুরোপুরি মুক্তি মেলে না।