সংক্ষিপ্ত
- ১৫০ বছরে প্রথমবার এত বড় ক্ষতি পুরীর মন্দিরে।
- ভেঙে গিয়েছে একাধিক মূর্তি।
- উপড়ে গিয়েছে শতাধিক গাছপালা।
ফণীর দংশনে যাবতীয় ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে গোটা ওড়িশা। ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পুরীর মন্দিরের দ্বার। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষের মতে ফণী ভালই ক্ষতি করেছে শতাব্দীপ্রাচীন এই মন্দিরের।
গত শুক্রবার সকাল ৮ টা ৫০ নাগাদ ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল ফণী। প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে বইতে থাকা 'এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সুপার সাইক্লোন ব্যাপক ক্ষতি করে গোটা রাজ্যের। শুধু পুরী জেলাতেই মারা যান ২১ জন। মন্দিরের ধ্বজা উড়ে যেতেই কর্তৃপক্ষ মন্দিরের সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ করে দেন। কিন্তু তাতেও রক্ষা করা যায়নি সমস্তটা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রশাসনিক অধিকর্তা পি কে মহাপাত্র সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, মন্দিরের মূল কাঠামো অক্ষত রয়েছে, তবে কিছু ছোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঠিক কতটা সেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ? জানা যাচ্ছে পুরীর মন্দিরের সিংহদরজা, স্থানীয় মানুষের কাছে অতি পবিত্র জয় বিজয় দ্বার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জয়ের মূর্তিটি ভেঙে গিয়েছে। জয় বিজয় পুরী মন্দিরের দ্বাররক্ষী বলে পরিচিত। কথিত আছে ভগবান বিষ্ণুরপ অভিশাপে মর্ত্যে তিন জন্মের জন্য পাঠানো হয়েছিল এই জয় বিজয়কে।
প্রসঙ্গত শুধু জয় বিজয়ই নয়, ভেঙেছে মন্দিরের ভিতরের একটি স্ট্যাচুও। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মন্দিরের শতাব্দীপ্রাচীন 'কল্পবট' নামক পবিত্র বটগাছটি। জগন্নাথ সংস্কৃতির অন্যতম অংশ এই বটগাছ। দর্শনার্থীরা এই গাছেই সুতো ঝুলিয়ে মানত করেন। ক্ষতি হয়েছে নীলাচল উপবনের বহু গাছেরও। উপড়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি গাছ।
সমস্ত ঘটনায় হতবাক পুরী মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি ১৯৯৯ সাইক্লোনে মারা গিয়েছিলেন প্রায় ১০০০০ মানুষ। তবু মন্দিরের ওপর কোনও আচড় পড়েনি। এবারের ঝড়ের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দির।
গত কয়েক দিনে দুবার মন্দির চত্বরে এসে ঘুরে গিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তার মতে গত ১৫০ বছরে এমন ঝড় তিনবার হয়েছে পুরীতে। বিরলের মধ্যে বিরলতম এই ঘটনা। আমরা দ্রুত ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এদিন ওড়িশা সফরে এসেছেন। পুরী মন্দির সফরের কর্মসূচী রয়েছে তার। ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্যে ১০০০ কোটি টাকা ত্রাণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।