সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের একবার কংগ্রেসকে তুলোধনা করলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। এবার তিনি কর্ণাটকে সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সরকারকে রাজনৈতিক আক্রমণে ভরিয়ে দিয়েছেন। কংগ্রেস আস্ত একটা মিথ্যেবাদী-র দল এবং দ্বিচারিতায় ভরা বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

একটা সময়ে যারা সমানে অপশাসন চালিয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার টুটি চিপে ধরেছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৬এ ধারাকে অপব্যবহার করেছে। আজ তাঁরাই ভুয়ো খবর নিয়ন্ত্রণে ঢাক পেটাচ্ছে! এই ভাষাতেই কর্ণাটকে সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সরকারকে কড়া আক্রমণ শানালেন রাজীব চন্দ্রশেখর। দেশের তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর এক টুইট বার্তায় এই ভাষাতেই রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে গোটা কংগ্রেস দল এবং কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়াকে নিশানা করেছেন।

আসলে ক্ষিপ্ত রাজীবের এই টুইট প্রকাশ্যে এসেছে সিদ্ধারামাইয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর। কর্ণাটকের তখতে কংগ্রেস বসার পর থেকেই সমানে রাজনৈতিক আক্রমণের নিশানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় জেরবার সিদ্ধারামাইয়ার সরকার। সমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চলা এই সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলে লাগাতার বিতর্কের মুখে সিদ্ধারামাইয়া, ডি কে শিবকুমাররা। এহেন পরিস্থিতিতে সিদ্ধারামাইয়া পুলিশ প্রশাসনকে এই সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে তথ্য দিয়ে কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করা হচ্ছে তা এক্কেবারে ডাহা মিথ্যে। এগুলি ফেক নিউজ বলেই জানিয়েছেন সিদ্ধারামাইয়া। তাই পুলিশ-প্রশাসনকে দিয়ে সাইবার সেলের সাহায্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস বিরোধী খবরের উপরে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেরকম তথ্য-প্রমাণ মেলে অভিযুক্তদের জেলে পোরা এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সিদ্ধারামাইয়ার এই সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া ভাষায় টুইট করেন রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি একটি টুইটে লেখেন, যখন কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য-প্রযুক্তি আইনের আওতায় ফেক নিউজ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল, তখন এই কংগ্রেসিরাই বিশেষ করে কপিল সিব্বল এবং ইন্ডিয়ান এডিটরস গিল্ড গেল গেল রব তুলে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগ করে চিৎকার-চেঁচামেচি করেছিল। অথচ এখন এই কংগ্রেসিদের-ই পরিচালিত সরকার ফেক নিউজ প্রতিরোধে বদ্ধ পরিকর শুধু নয়, তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রয়োজনে ইচ্ছে-মতো তাঁরা সাধারণ মানুষকে জেলে পুরে দিতে পারে। এই কংগ্রেসই ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৬ এ ধারাকে লঙ্ঘন করে গিয়েছে। এর দ্বারাই প্রমাণিত যে দ্বিচারিতায় ভরা যদি কোনও রাজনৈতিক দল থাকে তাহলে সেটা হল কংগ্রেস। 

Scroll to load tweet…

এই প্রসঙ্গেই রাজীব চন্দ্রশেখর আরও একটি টুইটের অবতারণা করেছেন। যেখানে তিনি রাহুল গান্ধীকেও আক্রমণ করতে কসুর করেননি। তিনি সম্প্রতি রাহুল গান্ধীর বিদেশ সফরে করা মন্তব্য যে ভারতের গণতন্ত্র বলে কিছু নেই- উক্তিকেও কড়াভাবে নিশানা করেছেন। টুইটে রাজীব লিখেছেন, - রাহুল গান্ধীর সরকার (যার মধ্যে পিনারাই বিজয়ন, এম কে স্টালিন, শরদ পাওয়ার-রাও পড়েন) বনাম মোদী সরকারের যে পার্থক্যটা যে ভুয়ো তথ্য পরীক্ষা-নিরিক্ষায় ফ্যাক্ট চেকের প্রতি আন্তরিকতায়। কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগীরা সারাক্ষণ মত প্রকাশের স্বাধীনতার ধুয়ো তুলে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে বেড়ায়। আর আমাদের সরকার যখন কোনও সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা কোনও তথ্যকে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করে সেখানে এমন সুযোগ থাকে যাতে তা আদালতে গিয়ে মিমাংসা করা যায়। অথচ এই রাহুল গান্ধীরা যখন বিদেশে গিয়ে বলে বেড়ান যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলে কিছু তখন তা প্রমাণ হয়ে যায় যে কত বড় মিথ্যে বলছেন তারা। এমনকী, এই কংগ্রেস সরকার ভুয়ো খবর প্রতিরোধে এমন রাস্তায় চলেছে যেখানে না আছে কোনও নিয়ন্ত্রণ রেখা বা নিয়ন্ত্রণের পর্যাপ্ত কাঠামো, শুধু ভুয়ো খবরের প্রচারকে অপরাধ বলে প্রতিপন্ন করে তারা কি করতে চাইছেন তা বোধগম্য নয়। কারণ, এর ফলে যা হবে যে বহু সাধারণ আম জনতাকে সিদ্ধারামাইয়ার সরকার জেলে পুরে দেওয়ার ক্ষমতা পেয়ে যাবে। তাই সকলকে একটাই পরামর্শ পরেরবার যখন কংগ্রেসের মানসিকতা নিয়ে যখন ভাববেন তখন একটাই ভাবনাকে অগ্রাধিকার দেবেন, এরা হল মিথ্যেবাদী এবং দ্বিচারিতায় ভরা। 

রাজীব চন্দ্রশেখরের এই টুইটার আক্রমণের প্রতিক্রিয়া অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি কংগ্রেসের কাছ থেকে। এখন দেখার কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর এমন আক্রমণে কংগ্রেস কীভাবে সামলায় এবং তার প্রত্যুত্তর দেয়।

আরও পড়ুন-- 
এশিয়ানেট নিউজের সাংবাদিকের নামে এফআইআর, কড়া প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের
'পুরোপুরি মিথ্যেবাদী'- জ্যাক ডোরসেকে তোপ রাজীব চন্দ্রশেখরের, প্রাক্তন টুইটার সিইও-র বয়ান ঘিরে চাঞ্চল্য
CoWIN পোর্টাল থেকে ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য ফাঁস? কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর