সংক্ষিপ্ত

চার মাস আগে ইন্টারপোল মেহুল চোকসির নাম বাদ দিয়ে দিয়েছিল রেড কর্নার নোটিশের তালিকা থেকে। দীর্ঘ দিন কোনও সাড়া করেনি সিবিআই।

 

পলাতক হিরে ব্য়বসায়ী মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ । সিবিআই ইন্টারপোলকে আবারও নতুন করে নোটিশ জারি করতে বলেছে। একই সঙ্গে তালিকা থেকে নাম বাজ দেওয়া নিয়ে আগে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার গুরুতর ত্রুটি, পদ্ধতিগত লঙ্ঘন ও ভুল ছিল বলেও উল্লেখ করেছে। কমইশন ফর কন্ট্রোল অব ইন্টারপোলের ফাইল সিসিএফ, গত বছর আপিলের ভিত্তিতে মেহুল চোসকির বিরুদ্ধে পলাতক তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছিল। এটি একটি পৃথক ইন্টারপোল সমস্থা যা ইন্টারপোল সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রাধীনে নয়। প্রধানত নির্বাচিত আইনজীবীদের দ্বারা কর্মরত। বিভিন্ন দেশে থেকে যাদের পলাতক ঘোষণা করা হয় তারা আইনজীবীদের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাচে পারে।

চোকসির বারবার আপিলের ভিত্তিতে সিসিএফ নভেম্বর ২০২২ সালের রেড কর্নার নোটিশের তালিকা থেকে তার নাম সরিয়ে দেয়। সিবিআই একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন। চোকসির বিরুদ্ধে পঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্ক থেকে ১৩০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালেই সে ভারত ছেড়ে পালিয়ে যায়। অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডায় রয়েছে চোকসি। ১৯৫টি দেশের শক্তিশালী আন্তর্জাতিক পুলিশ সহযোগি সংস্থা হল ইন্টারপোল। তারাই জারি করে রেড কর্নার নোটিশ। পতালক ব্যক্তিকে খুঁজে বার করা, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা, সংশ্লিষ্ট দেশে ফিরিয়ে দেওয়া, গ্রেফতার করা- এজাতীয় সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা মূলক ব্যহস্থা নেওয়ার জন্যই রেড কর্নার নোটিশ জারি করা হয়।

তবে মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ সরিয়ে নেওয়া নিয়ে এই রাজ্যের রাজনীতি যখন উত্তাল, মোদী সরকারে বিরুদ্ধে কংগ্রেস নতুন করে সুর চড়িয় তারপরই সিবিআই একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, তারা চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করার কথা বলেছে ইন্টারপোলতে। তবে চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল নভেম্বর মাসে। তারপরেই কেন সিবিআই চার মাস হাতে হাত গুটিয়ে বসে ছিল তার কোনও সাফাই বিবৃতিতে দেয়নি। সম্প্রতি ভারতেও গ্র্যান্ড ইন্টারপোলের একটি সাধারণ পরিষদের সভা আয়োজিত হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মত ব্যক্তিত্বরা। সিবিআই আরও জানিয়েছেন, ২০১৮ ও ২০২০ সালে চোকসি সিসিএফ-র মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিশ থেকে তার নাম সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু অ্যান্টিগুয়া আর বারবুডায় তাঁকে অপরহণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল - দাবি করে ২০২২ সালে আবেদন জানিয়েছিল চোকসি। তারপরই তার নাম সরিয়ে দেওয়া হয়।

পঞ্জাব ন্যাশানাল ব্য়াঙ্কের জালিয়াতি সামনে আসার পরই চোকসি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারপরই সিবিআই একই বছর ফেব্রুয়ারিতে চোকসিকে খুঁজে বার করার জন্য একটি ডিফিউশন নোটিশ জারি করেছিল। বিজেশী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চোকসির গতিবিধি ট্র্যাক করেছিল। সিবিআই সেই সময় জানিয়েছিল চোকসি অ্যান্টিগুয়া আর বারবুডয়া রেছে। পালানোর মাত্র এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে সেই সেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছে। তবে এবার সিবিআই বিবৃতিতে জানিয়েছে, মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে প্রত্যাপর্ণের অনুরোধটি কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের তাছে ২০১৮ সালেই পাঠান হয়েছিল। সিবিআই ২০১৮ সালেই চোকসির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। সিসিএফএর সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরই সিবিআই ওই সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর দায়ের করেছেন। সিবিআই ইতিমধ্যেই মেহুল চোকসিকে ওয়ান্টেড অপরাধীর তালিকাভুক্ত করেছে। চোকসির বিরুদ্ধে পাঁচটি ফৌজদারী মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছেন চোকসিকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়াও চলছে।