সংক্ষিপ্ত

পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন। আজ সফল ব্যবসায়ী আফসানা। তিনি অনেক মহিলাকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করছেন।

 

অনেক প্রতিকূলতায় সঙ্গে লড়াই করে আজ সাফল্যের মুখ দেখেছেন। তিনি আফসানা। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে ব্যবসা করছেন তিনি। নিজে স্বাবলম্বী হয়েছে। পাশাপাশি তাঁরই মত অনেক মহিলাকেও স্বাবলম্বি হতে সাহায্য করেছেন আফসানা। তাঁর সাহায্য আর তাংরএ এ লাকার একাধিক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীও টাকার মুখ দেখেছে। আসুন আজ আমরা আপনাদের কাছে আফসানার লডাইয়ের কাহিনি তুলে ধরি।

আফসানা তাঁর স্বামীর মহম্মদ আয়ুবের সঙ্গে রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন নয়ডা হাটের সরস আজিবীকা মেলায় স্টল দিয়েছেন। সেখানেই তিনি আওয়াজ দ্যা ভয়েসের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন তাঁর কঠিন সংগ্রামের অতীত দিনগুলি। তিনি বলেছেন মহম্মদ আয়ুবকে বিয়ে করার পরই তিনি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তিনি পরিবারের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা পাননি। বরং বাধাই পেয়েছিলেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা তা মেনে নেয়নি। ফাটল ধরেছিল তাঁদের দাম্পত্য জীবনেও। স্বামীও তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু নিজের জেদে অনড় ছিলেন তিনি। কঠিন লড়াই করেই নিজের পড়াশুনা শেষ করেন। তারপরই ব্যবসা শুরু করেন।

আফসানা জানিয়েছেন , একটা সময় এমনই আসে যে তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের তাঁর লড়াইয়ে পাশে পান। স্বামীও তাঁর কাছে ফিরে আসে। আফসানা জানিয়েছেন, তাঁর সামানে আর্থিক চ্যালেঞ্জ ছিল। যা তিনি শেষ করতে চেয়েছিলেন। আর সেই কারণেই কাজ করতে স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন। তিনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে চেয়েছিলেন , সন্তানদের আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রদান করতে চেয়েছিলেন। তাঁর তিন সন্তান বলেও জানিয়েছেন আফসানা।

আফসানা জানিয়েছেন তিনি ২০০৩ সালে মাত্র ৩ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। প্রতিদিন সকালে তিনি মাথায় কাপড়ের গাঁঠরি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যেতেন। দিনভর ব্যবসার কাজ করে সন্ধ্যের পরে বাড়ি ফিরতেন। আফসানা জানিয়েছেন,'আমি সারা জীবন যে লড়াই করেছি তা বর্ণনা করার মত নয়।'

আফসানা জানিয়েছেন, ২০০৩ সালে তিনি ভেবেছিলেন তাঁর নিজেরই কাপড় তৈরি করে বিক্রি করা উচিৎ। এর জন্যই তিনি একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করেন। দিল্লির বাড়িতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যদের কাপড় ও পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন তিনি বছরে এক লক্ষ টাকা আয় করছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন একটা সময় সরকারের থেকে তিনি পাঁচ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছিলেন। আফসানা আওয়াজ দ্যা ভয়েজকে জানিয়েছেন বর্তমানে তিনি দিল্লি, চেন্নাই, পাটনা, মুম্বই , উত্তরাখণ্ড দেরাদুনের মত শহরের ব্যবসার কাজে যান।

আফসানা তাঁর পুরনের দিনের কথা বলতে গিয়ে রীতিমত আবেগপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন তাঁর ও পরিবারের মাথার ওপর ছাদ ছিল না। কিন্তু এখন তাঁদের তিন সন্তানের অনেক ভাল ও স্বাচ্ছন্দ্য জীবন পেয়েছেন। আফসানা জানিয়েছেন, তিনি তাঁর দলের মহিলা সদস্যের মন দিয়ে ভালবাসের। দলের সদস্যদের আগলে রাখাই তাঁর একটি বড় দায়িত্ব। দলের প্রতিটি সদস্যকে আঁকড়ে রাখতে চান বলেও জানিয়েছেন।

আফসানার জলে এখন চারশোরও বেশি মহিলা কর্মী কাজ করেন। তিনি বলেন, অনেক ছাত্রীও রয়েছেন তাঁর দলে। যারা পড়াশুনা ও স্কুলের কাজ শেষ করে কাজ করেন। তারাও মাসে তিন হাজার টাকার মত আয় করে।

আফসানার স্বামী মহম্মদ আয়ুব জানিয়েছেন,তাঁর শুধুমাত্র হাতে তৈরি পোশাকই বিক্রি করেন। রামপুর ও আশপাশের একাধিক মহিলা তাঁদের দলের সদস্য। এই কাজটি তারা বাড়িতে বসেই করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন , তাঁর স্ত্রী যখন কাজ করতে চেয়েছিল তখন তাদের খুবই খারাপ লেগেছিল। কারণ তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্য়রা মনে করেছিলেন মেয়েদের কাজের জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু আফসানাই সেই ভুল ভেঙে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন। এখন তারা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছেন বলেও জানিয়েছেন। দম্পতি আওয়াজ দ্যা ভয়েজকে জানিয়েছেন কাজটি মূলত বাড়ি থেকে করা হয়েছে। তাই পড়ুয়ারাও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ 

মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিতে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো কি জরুরি? কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত চাইল সুপ্রিম কোর্ট

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২ দিনের জন্য ধর্নায় বসছেন, কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রীর

'ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন...', পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ইঁদুর তাড়ানোর যন্ত্রে আপত্তি সেবাইতদের