সংক্ষিপ্ত

  • আমেরিকা-ইরান উত্তেজনার গভীর প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতিতে
  • এমনটাই আশঙ্কা করছিলেন অর্থনীতিবিদরা
  • সোমবারই তার প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত মিলল
  • হুড়মুড়িয়ে পড়ল টাকার দাম

ইরানের সেনাপ্রধান জেলারেল কাশেম সোলেমানিকে হত্য়ার পর স্বাভাবিকভাবেই আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছিলেন ভারতের এমনিতেই বেহাল হয়ে থাকা অর্থনীতির উপর এই ঘটনার কঠোর প্রভাব পড়তে চলেছে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে সোমবার হুড়মুড়িয়ে পড়ল ভারতীয় টাকার দাম। গত দুই মাসের মধ্যে এদিনই টাকার দাম সবচেয়ে কম রয়েছে।

 শুক্রবার বাজার বন্ধের সময় টাকার দাম ছিল ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে ৭১.৮১। তার থেকে ০.৩ শতাংশ কমে এদিন আজ বাজার শুরুর দিকে, ভারতীয় মুদ্রার দাম দাঁড়ায় ৭২.০৪। দিনের একসময় তা পৌঁছায় ডলার প্রতি ৭২.০৫-এ। গত ১৪ নভেম্বর-এর পর ভারতীয় মুদ্রার দাম এতটা নামেনি।

মার্কিন-ইরান উত্তেজনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। গত নয় মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো সোমবার ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুড-এর দাম হয়েছে ৭০ ডলার। একলাফে দাম বেড়েছে ২.৭ শতাংশ। নতুন বছরের প্রথম ৬ দিনেই দাম প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এরই প্রভাব পড়ছে ভারতীয় অর্থনীতিতে। যে কারণেই এদিন এভাবে পতন ঘটল ভারতীয় মুদ্রার।

জেনারেল সোলেমানির হত্যার পর ইরান আমেরিকার উপর বড় ধরণের প্রতিশোধ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য ইরানকে এই বিষয়ে কড়াভাবে সতর্ক করেছেন। একই সঙ্গে ইরাকে সেনা ঘাঁটি নির্মাণে ব্যয় হওয়া কয়েক বিলিয়ন টাকা না ফেরত না দিয়ে সেখান থেকে মার্কিন বাহিনীকে চলে যেতে বাধ্য করলে ইরাকের উপর বহু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করারও হুমকি দিয়েছেন। এতে মধ্য প্রাচ্যে খনিজ তেল শিল্প আরও ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে মধ্যপ্রাচ্যের এই ঘটনা ভারতের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে চলেছে। গত দুই ত্রৈমাসিকে জন্য জিডিপির বৃদ্ধি পাঁচ শতাংশেরও নিচে রয়েছে। একইসঙ্গে পেঁয়াজ ও ডালের উচ্চমূল্যের ফলে মুদ্রাস্ফীতি পাঁচ শতাংশের উপরে চলে গিয়েছে। এই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনা। কয়েকদিন পরই কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হবে। সেখানে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ কর ছাড় এবং আরও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এই সঙ্কট নতুন করে ভারতীয় অর্থনীতিকে বড় ধাক্কা দিতে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।