সংক্ষিপ্ত
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে নিজেদের সন্তানদের জন্য আর্জি জানান প্রায় চারশোরও বেশি বাবা-মা। তাঁদের সন্তানেরা যাতে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় বিবাহের বৈধতা পায় সেবিষয় আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
সমলিঙ্গ বিবাহের স্বীকৃতি চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ এলজিবিটিকিউআইএ গোষ্ঠীভুক্তদের বাবা-মায়েরা। এই মর্মে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি দিলেন প্রায় চারশোরও বেশি বাবা-মা। ছেলেমেয়েদের যৌনতা ও অনুভূতির কথা ভেবে ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়ালেন তাঁরা। এই মামলার শুনানির চতুর্থ দিনে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে ফের সওয়াল জবাব চলে। এদিন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে নিজেদের সন্তানদের জন্য আর্জি জানান প্রায় চারশোরও বেশি বাবা-মা। তাঁদের সন্তানেরা যাতে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় বিবাহের বৈধতা পায় সেবিষয় আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
সমপ্রেমী বিবাহের বৈধতার জন্য লড়ছে দেশের যুব সমাজের একাংশ। সন্তানদের যৌনতার ভাবনাকে সমর্থন জানিয়ে এবার তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন মা বাবারাও। তাঁরা জানিয়েছেন সন্তানদের জীবন ও যৌনতার ভাবনাকে অনুভব করে তাঁরা তাঁদের গ্রহন করেছেন। এবার এই বিবাহের আইনি বৈধতা চাইছেন তাঁরা। বিচারপতিকে দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে,'যাঁরা এই ধরনের বিবাহের বিরোধিতা করছেন তাঁদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। কারণ, একসময় আমাদের মধ্যে অনেকে ওই পক্ষেই ছিলাম। কিন্তু শিক্ষা, আলোচনা আর ধৈর্যের মধ্য দিয়ে আমরা বুঝেছি, যে আমাদের সন্তানদের অনুভূতি যথার্থ। আজ যাঁরা সমলিঙ্গ বিবাহের বিরোধিতা করছেন, একদিন তাঁরাও আমাদের শরিক হবেন।'
প্রসঙ্গত, বিয়ে সম্পর্কে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে নতুন ভাবে সংজ্ঞা দেওয়ার কথা বললেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সমপ্রেমী প্রেমী বিবাহে নতুন প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। সমলিঙ্গ বিবাহ মামলার তৃতীয় দিনের শুনানিতে বিয়ের জন্য ভিন্ন লিঙ্গের দুই ব্যক্তির উপস্থিতি অপরিহার্য কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। শুধু তাই নয় সমকামী সম্পর্ক যে শুধু শারীরিক চাহিদার উপর নির্ভর করে না, সে কথাও পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। আদালতের পক্ষে বলা হয়েছে,'সমকামী সম্পর্কগুলি কেবল শারীরিক নয় বরং মানসিক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক।
উল্লেখ্য সমপ্রেমী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে উঠে এল ৩৭৭ ধারা। ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারাকে প্রত্যাহার করে সমকামিতাকে 'অপরাধ'-এর তকমা থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে টেনে আদালতের,'যদি সমকামিতা অপরাধ না হয় তবে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক সমলিঙ্গের মানুষের বিয়ের মতো স্থিতিশীল বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা কোথায়?' পাশাপাশি তিনি এও বলেন,'বিয়ে সম্পর্কে চিরাচরিত ধারণার নতুন সংজ্ঞা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, সমপ্রেমী বিবাহে কেন্দ্রের 'শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি' তত্ত্ব খারিজ করল আদালত। এই মন্তব্যের নিরিখে কোনও যথাযথ প্রমাণ কেন্দ্র পেশ করতে পারেনি বলেও জানান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সমকামী বিবাহের জন্য আইনি অনুমোদন চাওয়ার যুক্তি শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বুধবার এমনটাই জানালো। প্রধান বিচারপতি জানান কেন্দ্রের কাছে কোনো তথ্য নেই যে এটি একটি শহুরে অভিজাত ধারণা। তাঁর কথায়,'রাষ্ট্র একজন ব্যক্তির সঙ্গে এমন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বৈষম্য করতে পারে না যার উপর ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের কাছে এমন কোনো তথ্যও নেই যাতে দেখা যায় যে সমলিঙ্গের বিয়ে একটি শহুরে অভিজাত ধারণা।'
আরও পড়ুন -
প্রয়াত পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল, মোহালির হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
'জবাব দিয়ে সময় নষ্ট করবো না', রাষ্ট্রসঙ্ঘে কাশ্মীর নিয়ে সুর ধরতেই পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব ভারতের