সংক্ষিপ্ত
মিডিয়ার অন্তর্তদন্তে দাবি করা হয়, পঞ্চাশ হাজার যে ফোন নম্বর তালিকা পেগাসাস অ্যাপের লিকড ডেটায় সামনে এসেছে সেখানে অন্তত ৩৭টি এমন সেলফোন নম্বর রয়েছে যার উপরে গোপন নজরদারি চালানোর একদম যথাযথ প্রমাণ রয়েছে।
আবারও আদালতে পেগাসাস ইস্যু (Pegasus)। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বুধবার শুনানির জন্য একাধিক পিটিশন (bouquet of petitions) তালিকাভুক্ত করেছে। এই পিটিশনগুলির উপর ভিত্তি করে যে টেকনিক্যাল কমিটি তৈরি করা হয়েছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আর.ভি. রবীন্দ্রন। নাগরিকদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য ইসরায়েলি সামরিক গ্রেড সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে সরকারের অভিযোগগুলি পরীক্ষা করার জন্য গত অক্টোবরে রবীন্দ্রন এই কমিটি তৈরি করেন।
উল্লেখ্য, দ্য হিন্দুর প্রাক্তন প্রধান সম্পাদক এন. রাম এবং সিনিয়র সাংবাদিক শশী কুমারের একটি সহ ১২টি মামলা ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) এনভি রমনার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের সামনে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে আইনজীবী মনোহর লাল শর্মার দায়ের করা প্রধান মামলাটি টেকনিক্যাল কমিটির জমা দেওয়া অন্তর্বর্তী রিপোর্টের সঙ্গে শোনা হবে।
এর আগে গত বছর পেগাসাস মামলা ওঠে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে জোর ধাক্কা খায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দেয় এই মামলায় কেন্দ্র যে রিপোর্ট পেশ করেছে তা অসম্পূর্ণ ও অস্বচ্ছ। এই রিপোর্টে মোটেও সন্তুষ্ট নয় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, পেগাসাসকাণ্ডে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ে সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হয় এই কমিটিতে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং দুজন সাইবার বিশেষজ্ঞ।
যাইহোক, জানুয়ারির শুরুতে, কমিটি একটি পাবলিক নোটিশ জারি করে তাদের জন্য, যারা দাবি করেছিলেন যে তারা পেগাসাস স্নুপিংয়ের শিকার হয়েছেন। তাদের সন্দেহ প্রমাণ করার জন্য বিস্তারিত কারণ দিতে বলা হয়। সাংবাদিক, কর্মী, সংসদ সদস্য, সরকারী কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং এমনকি আদালতের কর্মচারী থেকে শুরু করে এক শ্রেণীর লোককে পেগাসাস ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
মিডিয়ার অন্তর্তদন্তে দাবি করা হয়, পঞ্চাশ হাজার যে ফোন নম্বর তালিকা পেগাসাস অ্যাপের লিকড ডেটায় সামনে এসেছে সেখানে অন্তত ৩৭টি এমন সেলফোন নম্বর রয়েছে যার উপরে গোপন নজরদারি চালানোর একদম যথাযথ প্রমাণ রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট-সহ বিশ্বের ১৭টি মিডিয়ার চালানো এই অন্তর্তদন্তের রিপোর্টে এও দাবি করা হয়েছে যে, যে ৩৭টি নম্বরের উপরে নিশ্চিতভাবে গোপন নজরদারি হয়েছে- তারমধ্যে বেশকিছু নম্বর সিনিয়র সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, বিজনেস এক্সিকিউটিভস রয়েছেন।
এই রিপোর্টের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ভারতে। বলা হয় ভারতবর্ষে ৩০০ ব্যক্তিগত ফোন নম্বরের উপর চলছিল গোপন নজরদারি। চাঞ্চল্যকর মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়, মোট পঞ্চাশ হাজার ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। এই ফোন নম্বরগুলি বিশ্বজুড়ে এমনকিছু দেশের যেখানকার সরকার কোনও না কোনও সময়ে নাগরিক অথবা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা অথবা সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের উপরে গোপন নজরদারির জন্য অভিযুক্ত হয়েছে।