সংক্ষিপ্ত
- বিজ্ঞানের যুগেও মানুষ যে কতখানি কুসংস্কারাচ্ছন্ন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল
- আর সেই কুসংস্কারের জালে জড়িয়ে পড়লেন এক শিক্ষক
- নগ্ন হয়ে মন্ত্রপাঠ করে শিশুকে বলির চেষ্টা
- ঘটনাকে ঘিরে অসমে তুলকালাম
আজকের দিনে বিজ্ঞানের যুগেও মানুষ যে কতখানি কুসংস্কারাচ্ছন্ন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল আরও একবার। আর সেই কুসংস্কারের জালে জড়িয়ে পড়ে একজন শিক্ষক যা করলেন, তা নিঃসন্দেহেই খুব অস্বাভাবিক। সূত্রের খবর একজন শিক্ষক এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নরহত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ উঠল।
ঘটনাটি ঘটেছে অসমের উডালগুড়ি জেলায়। অভিযোগ সেখানকার একজন শিক্ষক এবং তাঁর পরিবার এ কটি তিন বছরের শিশু সন্তানকে যজ্ঞে আহুতি দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন স্থানীয় প্রতিবেশিরা। ওই শিক্ষকের বাড়িতে যজ্ঞের আভাস পেয়ে সেখানে ছুটে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা ক আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হন। তাঁরে দেখেন কয়েকজন মহিলা-সহ বাড়ির সকলেই নগ্ন অবস্থায় বসে রয়েছেন যজ্ঞের আগুনের সামনে এবং সকলেই যজ্ঞের মন্ত্র পাঠ করছেন। এবং যজ্ঞের বেদির সামনে বসিয়ে রেখেছেন একটি শিশুকে। স্থানীয়রা আরও জানান যে, যজ্ঞের যিনি পুরোহিত, তাঁর হাতে ছিল একটি ধারালো তরোবারি। স্থানীয়দদের দাবি তা দিয়েই শিশুটিকে বলি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা।
ঘটনাটি দেখে ভয় পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেয় পুলিশে। ইতিমধ্যে তারা বারবার শিশুটিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তাতে কোনও লাভ হয়নি। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে থাকে। পুলিশকে দেখা মাত্রই বাড়িতে থাকা যাবতীয় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা এবং পুলিশকেও বিভিন্নভাবে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখে বাধ্য হয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। আর সেই গুলিতে বিদ্ধ হন ওই শিক্ষক এবং তাঁর ছেলে। তাঁদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং উদ্ধার করা হয় ওই তিন বছরের শিশুটিকে।
জানা গিয়েছে ঘটনাস্থল থেকে তান্ত্রিক-সহ পরিবারের বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় জানা গিয়েছে, যে শিশুটিকে বলি দেবেন বলে ঠিক করেন তাঁরা, সে আসলে ওই স্কুল শিক্ষকের শ্যালিকার মেয়ে। শিশুটির বাবাই নাকি তাঁকে বলি দেওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছিল বলেও জানান তাঁরা। তিন বছর আগে একটি মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনার পর সেই বাড়িতে তান্ত্রিকদের আনাগোনা ছিল বলে খবর। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।