সংক্ষিপ্ত

শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পরতে পরতে মিল রয়েছে আরও এক হত্যাকাণ্ডের। দিল্লিতেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সহবাসসঙ্গীকে হত্যা করল মহিলা। দেহ ১০টি টুকরো করে লুকিয়ে রেখেছিল বাড়ির ফ্রিজে।

 

শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের মতই আরও একটি নৃশংশ হত্যাকাণ্ড সামনে এল। এবারও ঘটনাস্থল সেই দিল্লি। পূর্ব দিল্লির পাণ্ডব নগরে এক মহিলার ছেলের সাহায্যে স্বামীকে খুন করে দেহ ১০টি টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে দেহগুলি নষ্ট করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছিল। যদিও দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ডিপার্টমেন্ড মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ছেলেকেও। মহিলা ও তার ছেলে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের যথেষ্ট মিল রয়েছে। শুধুমাত্র এটাই নয়, শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়েই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের পর্দা খুলতে শুরু করেছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, গত জুন মাসে পাণ্ডবনগরের কাছে দিল্লি পুলিশ কতগুলি দেহের টুকরোর সন্ধান পেয়েছিল। সেগুলি অত্যাধিক পচে যাওয়ায় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে সামনে আসতেই সেই উদ্ধার হওয়া দেহের টুকরোগুলি শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে নতুন করে পরীক্ষা করা হয়। তাতে জানা যায় দেহগুলির শ্রদ্ধার নয়। তারপরই নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। তাতেই সামনে আসে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।

দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন করে তদন্ত শুরু করার পরই ক্রাইম ব্রাঞ্চ এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ স্ক্যান করেছে। যেখানে শরীরের অংশগুলি পাওয়া গিয়েছিল। তাতেই দেখা গেছে এক মহিলা ও এক পুরুশ রাতের অন্ধকারে এলাকা পরিদর্শন করেছে। ফুটেজে একটি ব্যাগও ধরা পড়েছে। তাতেই পুলিশ নিশ্চিত হয় এই অপরাধের সঙ্গে এক মহিলা ও পুরুষ জড়িয়ে রয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই এলাকারই বাসিন্দা অঞ্জন দাস গত ৬ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে। তবে অঞ্জনের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তাতেই পুলিশের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। অঞ্জন দাস সম্পর্কে খোঁজ খবর করতেই সামনে আসে পুনম নামের এক মহিলার কথা।

দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর অঞ্জন দাস বিহারের বাসিন্দা। দিল্লিতে গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেখানেই কাজকর্ম করতে। পুনম নামের এক মহিলার সঙ্গে কয়েক মাস থাকতে শুরু করেছিল। পুনম আর অঞ্জন শ্রদ্ধা- আফতাবের মতই লিভইন সম্পর্কে ছিল বলেও মনে করছে দিল্লি পুলিশ। পুনমের একটি ছেলে রয়েছে। নাম দীপক। পুনমের স্বামী ২০১৭ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মরা যায়। তারপর থেকে অঞ্জনের সঙ্গেই থাকত পুনম। দিল্লি পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে পুনমের গয়না বিক্রি করে সেই টাকা সে বিহারে পাঠিয়ে দিয়েছিল । সেখানে অঞ্জনের স্ত্রী ও আট সন্তান থাকে। তাতেই ক্রুব্ধ হয়ে পুনম অঞ্জনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

জেরায় পুনম ও তার ছেলে দীপক হত্যার কথা স্বীকার করেছে। জানিয়েছে অজ্ঞনকে কোল্ডড্রিংকের মধ্যে ওষুধ দিয়ে খাইয়ে অজ্ঞান করে দিয়েছিল। তারপর অঞ্জনের দেহ ১০টি টুকরো করেছিল। টুকরোগুলি প্রথমে ফ্রিজে রেখেছিল। তারপর একে একে সেগুলি পাচার করার পরিকল্পনা ছিল। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর অঞ্জনের দেহ ১০টি টুকরো করা হয়েছে। পুনমের ছেলে দীপক জানিয়েছে তার স্ত্রীকে অঞ্জন হেনস্থা করেছিল। আর সেই কারণেই সে মায়ের সঙ্গে মিলে অঞ্জনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অঞ্জন হত্যাকাণ্ডের প্রচুর মিল রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ