সংক্ষিপ্ত
- বলা হয় শাহিনবাগের আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত
- গেরুয়া শিবিরের দাবি তা স্বতঃস্ফূর্ত নয়
- বরং তা তৈরি করা হয়েছে ধীরে ধীরে
- শারজিল ইমামের হাত ধরেই তা তৈরি হয়েছে বলে দাবি
চোখ দুটো যেন জ্বলজ্বল করছে। ডুব দিলেই মহাসমুদ্রের গভীরতা। যেন হাজার বছর ধরে পথ হাঁটছে এই তরুণ। যেন সত্তর দশকের নকশালপন্থী সেই তরুণ, পুলিশের গুলির হাত থেকে বাঁচতে প্রাণপণে ছুটে চলেছে কলকাতা-৭১-এর অলিগলি ধরে। শারজিল ইমাম। শাহিনবাগ আন্দোলনের নেপথ্য় রূপকার। গেরুয়া শিবিরের চক্ষুশূল।
আইআইটির প্রাক্তন পড়ুয়া শারজিল বর্তমানে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রিসার্চ স্কলার। দ্য় ওয়ার, দ্য় কুইন্টের মতো নামজাদা নিউজ পোর্টালের নিয়মিত কলামনিস্ট যে শাহিনবাগের মূল উদ্য়োক্তা, তা সম্ভবত এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অনেকেই জানেন না। হিন্দি, উর্দু ও ইংরিজি সংবাদপত্রের নিয়মিত লেখক শারজিল ইমাম কিছুদিন আগে ঘুরে গেলেন আসানসোল থেকে। গত ৪৫ দিন ধরে বাড়িছাড়া হয়ে রয়েছেন শারজিল।
নিউজ চ্য়ানেল রিপাবলিক সম্প্রতি শারজিলকে নিয়ে একটি স্টিং অপারেশন করেছে। প্রমাণ করতে চেয়েছে, শাহিনবাগ আসলে শারজিলের হাতে তৈরি, তা কোনও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন নয়। হাতেগোনা হলেও কিছু নিউজ পোর্টালে শারজিলকে নিয়ে কিছু স্টোরি করেছে। তবে মূলস্রোতের মিডিয়া সে অর্থে শারজিলকে নিয়ে নীরব।
কীভাবে একদিনের চাক্কাজ্য়ামকে পুরোদস্তুর শাহবাগ আন্দোলনে পরিণত করলেন শারজিল, তা-ও কিন্তু কম বিতর্কের নয়। শারজিলের কথায়-- ডিসেম্বরের ৫ তারিখে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে পরেরদিন সিএএ নিয়ে পামফ্লেট বিলি করবেন। সেইমতো ১০ থেকে ১৫ হাজার পামফ্লেট ছাপানো হয়। জেএনইউ থেকে ৬০ কি ৭০ জন পড়ুয়া এসে জড়ো হন। ওঁরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চলে যান পুরনো দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় যান। শারজিল নিজে যান নিজামুদ্দিনে। আর এভাবেই শুরু হয় পুরো আন্দোলন।
অভিযোগ, অযোধ্য়া মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সংবিধান পুড়িয়ে দেওয়ার কথাও নাকি শোনা যায় শারজিলের মুখে। এমনকি, আলিগড় বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এই ছাত্রনেতাকে রীতিমতো প্ররোচনামূলক বক্তব্য় রাখতেও শোনা যায়। তিনি নাকি বলেন, মুসলিমদের কি এটুকুই হিম্মত নেই যে উত্তর ভারতের কিছু অংশ অচল করে দিতে পারেন তাঁরা। তবে তাঁকে নিয়ে যেটুকু-যা জানা যায়, তা গেরুয়া শিবিরের সৌজন্য়েই।
শাহিনবাগ আন্দোলন প্রত্য়াহার করে নেওয়ার ডাক দিয়ে কিছুদিন আগে ফেসবুকে পোস্ট করেন শারজিল। তাতেও বিতর্ক কিছু কম হয় না। জেএনইউয়ের এই স্কলারের বক্তব্য় ছিল, আন্দোলন এথন এমন কিছু লোকের হাতে চলে গিয়েছে যে তাকে প্রত্য়াহার করে নেওয়াই শ্রেয়।
গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য়, শাহিনবাগ আন্দোলন সে অর্থে স্বতঃস্ফূর্ত বা অরগ্য়ানিক কিছু নয়। তা আপনাআপনি গড়ে ওঠেনি। বরং তা শারজিল ইমামের মতো ছাত্রনেতার হাতে 'তৈরি' হয়েছে।