সংক্ষিপ্ত
- এতদিন বিজেপির সঙ্গে ৫০-৫০ ফর্মুলা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল শিবসেনা
- এবার উঠে এল নতুন ফর্মুলার লড়াই ১৬-১৪-১২ না ১৪-১৪-১৪
- সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের দাবি নিয়েও একমত নয় এনসিপি ও শিবসেনা
- রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টালেও শিবসেনার দরাদরি শেষ হচ্ছে না
বিজেপির কাছে মুখ্য়মন্ত্রীর চেয়ারের ভাগও ৫০-৫০ ফর্মুলায় চেয়েছিল শিবসেনা। বিজেপি তা না মানাতেই তিন দশকের জোট ভেঙে বেরিয়ে এসেছেন উদ্ধব ঠাকরে। মহারাষ্ট্র ররাজনীতিতে এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে শিবসেনার নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ফের একবার শিবসেনার দরাদরিতেই ভেস্তে যেতে পারে নয়া জোট গঠনের প্রক্রিয়া। মহারাষ্ট্রের বিজেপির পর শিবসেনার দর কষাকষির নতুন নিশানা কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলায় কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা তিন দল বসেছিল ন্যুনতম সাধারণ কর্মসূচি নির্ধারণে। কিন্তু কর্মসূচি আলোচনার থেকেও কোন ফর্মুলায় ক্ষমতা ভাগাভাগি হবে তাই নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি বিষয়ে এখনও কোও সমাধান সূত্র বের হয়নি বলেই জডানা যাচ্ছে।
১৬-১৪-১২ না ১৪-১৪-১৪
জানা গিয়েছে শিবসেনার দাবি মন্ত্রীসভায় আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস'এর ফর্মুলা হোক ১৬-১৪-১২। অর্থাৎ ১৬টি মন্ত্রীত্ব শিবসেনা পাবে, ১৪টি এনসিপি ও ১২টি কংগ্রেস। আর এনসিপি-কংগ্রেস'এর ইউপিএ জোট চাইছে ১৪-১৪-১৪ ফর্মুলা।
পাঁচ বছর না আড়াই বছর
বিজেপির কাছে শিবসেনার দাবি ছিল পাঁচ বছরের মধ্যে মুখ্য়মন্ত্রীর পদে আড়াই বছর করে থাকুক বিজেপি-শিবসেনা দুই দলের প্রতিনিধিই। এবার কংগ্রেস-এনসিপির কাছে আর অর্ধেক নয়, পুরো পাঁচ বছরের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জানিয়েছে তারা। নয়া জোট সমীকরণে ৫৬ আসন নিয়ে তারাই বড়দা। তবে তাদের থেকে মাত্র দুটি আসন কম পেয়েছে এনসিপি। তাই সুযোগ বুঝে তারাও মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জানিয়েছে। এবার তারা দাবি তুলছে ৫০-৫০ ফর্মুলা প্রয়োগের।
ছয় প্রধান মন্ত্রীত্ব
একই সঙ্গে জানা যাচ্ছে দুই ইউপিএ জোটসঙ্গী কংগ্রেস ও এনসিপি অন্তত ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দাবি জানিয়েছে। এর মধ্য়ে রয়েছে, রাজস্ব, নগরোন্নয়ন ও স্বরাষ্ট্র।
বাধ সাধছেন সাভারকর
মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের প্রচার পর্বেই সাভারকরকে ভারত রত্ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল শিবসেনা। সেই সময় তাদের জোটসঙ্গী বিজেপি-ও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস এর ঘোর বিরোধী। কাজেই সাবারকরকে ভারতরত্ন দেওয়ার বিষয নিয়েও দুইপক্ষের দ্বন্দ্ব রয়েছে।
সহজে ছাড়বে না কংগ্রেস
এদিকে কংগ্রেস শিবসেনা-কে সহজে ছাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সনিয়া গান্ধী বারবার রাজ্যের নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন, এমন কিছু যেন না করা হয় যাতে জনমানসে ধারণা তৈরি হয়, শিবসেনার কাছে কংগ্রেস মাতা নুইয়েছে। উদ্ধব ঠাকরেই যে তাঁদের কাছে এসেছিলেন, সেটা যেন স্পষ্ট থাকে।
সাবধানী শিবসেনা
বিজেপির ক্ষেত্রে একেবারে স্টেপ আউট করে খেলছিল শিবসেনা। কিন্তু নয়া জোট গঠনের ক্ষেত্রে ঠাকরেদের দল বেশ সাবধানী পদক্ষেপ নিচ্ছে। পুরো সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাওয়া হচ্ছে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত আগামী ২৫ বছরই মুখ্যমন্ত্রী পদে শিবসৈনিককে দেখতে চান বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।
পওয়ার প্লে
এই অবস্থায় একেবারে চুপ রয়েছে শরদ পওয়ারের এনসিপি।
মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। তবে বিধানসভা ভাঙা হয়নি। ফলে এখনও কোনও দল বা জোট মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারে। আর রাজ্যে অহবিজেপি প্রধান তিন দল সেই প্রক্রিয়াই চালাচ্ছে। তবে ফের গোল বেধেছে সেই ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়েই। কাজেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক টানাপোড়েন দ্রুত শেষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না।