সংক্ষিপ্ত
- শ্রমিক স্পেশ্যালট্রেনের টিকিটের ভাড়া নিয়ে মহাবিতর্ক
- এই ট্রেনে ফেরার জন্য খরচ শ্রমিকদেরই দিতে
- যা নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে সরকারকে
- এর মাঝেই শ্রমিকদের জন্য বড় ঘোষণা করলেন সনিয়া গান্ধী
গত শুক্রবার শ্রমিক দিবসের দিন দেশের নানা প্রান্তে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রিমকদের বাড়ি ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু এই শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া নিয়ে তৈরি হয়েছিল মহাবিতর্ক। ট্রেনের ভাড়া শ্রমিকদেরই দিতে হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। এই নিয়ে স্বভাবতই বিরোধী শিবির আক্রামণ শুরু করে মোদী সরকারের উপর।
একদিকে টানা লকডাউনের জেরে দেশে কল-কারখান, অফিস-কাছারি বন্ধ। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পরিযায়ী শ্রমিকদের। দিনে আনা দিনে খাওয়া মানুষগুলির রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরকার প্রথমবার লকডাউনে তাঁদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও দ্বিতীয়বারের লকডাউনের বেলায় নতুন কোনও ঘোষণা আসেনি। এই অবস্থায় দেশের নানা প্রান্তে আটকা পড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার অনুমতি পেলেও কীভাবে ভাড়ার যোগান হবে তানিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন। এর মাঝেই বড়সড় ঘোষণা করলেন কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
ভিন রাজ্যে আটকে থাকা অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার খরচ জোগাবে কংগ্রেস। সোমবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
বিবৃতিতে সনিয়া গান্ধী বলেন, “অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফেরার ভাড়ার টাকা জোগাবে সেই রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি। এর জন্য সরকারের ওপরে ভরসা করতে হবে না শ্রমিকদের। এটা সহনাগরিকদের প্রতি কংগ্রেসের কর্তব্য। আমরা ওদের প্রতি সহানুভুতি জানাই।” সনিয়া আরও যোগ করেন, “শ্রমিকরাই এই দেশের মেরুদণ্ড। ওঁদের পরিশ্রম আর আত্মত্যাগই দেশ নির্মাণের ভিত্তি। ১৯৪৭ দেশভাগের পর কোনো দিন শ্রমিকদের এভাবে দুর্দশায় পড়তে হয়নি।”
বিশ্বের দরবারে মোদীর ভাষণ, হাইড্রোক্লিক্লোরোকুইনের পর জানাবেন মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল
আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লক্ষ, বছরের শেষেই আসছে করোনা ভ্যাকসিন, আশ্বাস দিলেন ট্রাম্প
খিদের জ্বালায় কাঁদছে ৮ সন্তান, ভোলাতে পাথর রান্না করলেন অসহায় মা
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যে বিশেষ ট্রেনগুলির ব্যাবস্থা হয়েছে তার ভাড়া কেন্দ্র বা রেল কেউই দিচ্ছে না।‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের টিকিটের দাম এবং শ্রমিকদের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়ছে কেন্দ্র। শ্রমিকদের কাছ থেকেই তা তুলতে হবে। এবং এই টাকা তুলে রেলের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্য সরকারগুলিই। রাজ্য চাইলে শ্রমিকদের থেকে টাকা নাও নিতে পারে। তবে, টিকিট ছাড়া রেল শ্রমিকদের ফেরাবে না। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে সনিয়া বলেন, 'বিদেশে আটকে থাকা নাগরিকদের ফেরাতে বিনামূল্যে বিমান সফর করিয়ে যখন সরকার নিজেদের দায়িত্ব চেনাতে ব্যস্ত, যখন সরকার গুজরাটে মাত্র একটি অনুষ্ঠানের জন্য ও তার যাতায়াত এবং খাওয়া খরচের জন্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে সমর্থ, যখন প্রধানমন্ত্রীর করোনা তহবিলে ১৫০ কোটি টাকা দান করেছে রেলমন্ত্রক, তখন দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের প্রতিও কেন সমান সৌজন্য দেখানো হবে না। বিশেষত এই কঠিন দুর্দশার মধ্যে বিনামূল্যে রেল সফরও কেন করতে দেওয়া হবে না?'
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে রায়বরেলির সাংসদ আরও বলেন, '১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর এই প্রথম এমন দুঃখময় অধ্যায়ের সাক্ষী ভারত, যেখানে এত মানুষের উপর বিপর্যয় নেমে এসেছে। হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক খাদ্য, ওষুধ, অর্থ, পরিবহণ পরিষেবা না-পেরে পরিবার ও ভালোবাসার মানুষদের কাছে ফিরতে হাজার হাজার কিমি পথ হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন। এই সংকটের সময় কেন্দ্রীয় সরকার ও রেলমন্ত্রক তাঁদের থেকে ভাড়া নিচ্ছে, এটা খুবই কষ্টের।'