সংক্ষিপ্ত
রবিবার চিনের দিকে মোল্ডো পয়েন্টে ভারতের সঙ্গে সেনা পর্যায়ের আলোচনায় বসেছিল চিন। এটাই ছিল ১৩তম বৈঠক। ভারতের তরফে সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও চিন তা মানতে অস্বীকার করেছে।
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (Line of Actual Control) থেকে সেনা সরানো নিয়ে ভারতের (India) প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল চিন (China)। এর ফলে পূর্ব লাদাখ নিয়ে দু'দেশের মধ্যেকার সমস্যার কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া গেল না। ভারত ও চিনের ১৩তম আলোচনাতেও অধরা থেকে গেল সেই সমাধান সূত্র।
রবিবার চিনের দিকে মোল্ডো পয়েন্টে (Moldo border) ভারতের সঙ্গে সেনা পর্যায়ের আলোচনায় বসেছিল চিন। এটাই ছিল ১৩তম বৈঠক। ভারতের তরফে সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও চিন তা মানতে অস্বীকার করেছে। বৈঠকের আগে থেকেই একটা উত্তেজনা ছিল। এই বৈঠকের মাধ্যমে কোনও রফাসূত্র মেলে কিনা সেদিকে তাকিয়ে ছিল দিল্লি। কিন্তু, ভারতের তরফে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করলেও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি বেজিং। ফলে লাদাখ সন্নিহিত অঞ্চল নিয়ে এতদিন যে সমস্যা ছিল তা রয়েই গেল।
আরও পড়ুন- কয়লার ঘটতি নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় উত্তপ্ত দিল্লি, সামনে এল AAPর তিন বছর পুরনো টুইট
সূত্রের খবর ভারত-চিন সেনা কর্তাদের এই বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় বস্তুই ছিল হটস্প্রিং আর দোপসাং উপত্যাকায় উত্তেজনা প্রসমন নিয়ে। হটস্প্রিং- চিনা সেনা সরানোর উপর জোর দেওয়া হবে বলে আগেই জানানো হয়েছে। বৈঠকের আগেই ভারতীয় সেনাপ্রধান এমএম নরবণে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, চিন যদি সেনা প্রত্যাহার না করে তাহলে ভারতও সেনা সরাবে না। সম্প্রতি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা রেখা এলাকায় চিন সক্রিয় হয়েছে। প্রচুর সেনা মোতায়েন করেছে তারা। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রও নিয়ে এসেছে চিন।
রবিবার প্রায় ৯ ঘণ্টার বৈঠকেও এই সমস্যার কোনও সমাধানসূত্র বের হল না। ফলে পরিস্থিতি যেমন উত্তপ্ত ছিল তেমনই উত্তপ্ত হয়ে রইল। এই বৈঠক নিয়ে ভারতের তরফে দাবি করা হয়েছে, যে চিনের সামনে গঠনমূলক আলোচনার (constructive suggestions) একটি প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। কিন্তু, চিন তাতে কোনওভাবেই রাজি হয়নি। এর ফলে দু'তরফেই সেনা সরানোর বিষয়টি অধরাই রয়ে গেল।
আরও পড়ুন- লক্ষ্য পূর্ব লাদাখ সেক্টরে শান্তি, ভারত-চিন ৯ ঘণ্টা বৈঠক
সোমবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, "আমরা আশা করছি চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি মাথায় রেখে এই সমস্যা নিয়ে দ্রুত সমাধানের রাস্তায় হাঁটবে। পাশাপাশি, দু’দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা-ও মেনে চলবে।"
অন্য দিকে চিনের পাল্টা অভিযোগ, ভারত অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন দাবি করছে। পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র মুখপাত্রের দাবি, নিজেদের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে চিন এই সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত। তাঁর অভিযোগ, ভারত এই পরিস্থিতিকে ভুল ভাবে বিচার করছে। শুধু তাই নয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এই পরিস্থিতিটা তারা উপভোগ করছে। ভারতেই উচিত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা।
আরও পড়ুন-TMC: পুজোর শুরুতেই তৃণমূলের চমক, নাফিসার সঙ্গে ডেরেকের সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
উল্লেখ্য, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার সমস্যা নিয়ে দু'দেশের মধ্য়ে শেষ বৈঠক হয়েছিল গত জুলাই মাসে। বেশ কিছুক্ষণ বৈঠকের পর ঠিক হয়েছিল যে লাদাখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাবে দুই দেশ। এদিকে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের বারাহতি ও অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরে ভারতীয় সীমান্তে চিনা সেনা প্রবেশের চেষ্টা করে। তা নিয়ে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। আর সেই পরিস্থিতির মধ্যেই আলোচনায় বসেছিল ভারত-চিন। কিন্তু, দীর্ঘ বৈঠকের পরও অধরা থেকে গেল রফাসূত্র।