সংক্ষিপ্ত

মহারাষ্ট্রে শিবসেনা সরকারের উপর যে এতে চাপ বাড়ল তাতে সন্দেহ নেই। কারণ বিজেপি-র বিরুদ্ধে অনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগ এনে বারবার সরব হয়েছে শিবসেনা। এমনকী মহারাষ্ট্র সরকারে তাদের দুই শরিক কংগ্রেস ও এনসিপি-ও বিজেপি-কে এই ইস্যুতে তুলোধনা করেছিল। 

মহারাষ্ট্রের ১২ বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন নিয়ে কড়া অবস্থান ব্যক্ত করল সুপ্রিমকোর্ট। সেই সঙ্গে এই সাসপেনশনকে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক, উদ্দেশপ্রণোদিত বলেও মন্তব্য করেছে শীর্ষআদালত। প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে এই ১২ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছিলেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করেছিলেন সাসপেন্ডেড বিজেপি বিধায়করা। মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তে ১২ বিজেপি বিধায়ককে ১ বছরের জন্য সাসপেনশন দেওয়া হয়েছিল। 

গত বছর মহারাষ্ট্র বিধানসভার মনসুন সেশনে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ ছিল। এমন অভিযোগও করা হয়েছিল যে ওই ১২ বিজেপি বিধায়ক অধ্যক্ষের কেবিনে থাকা প্রিসাইডিং অফিসারকেও হেনস্থা করেছেন। এরপরই বিধানসভার অধ্যক্ষ ১২ বিজেপি বিধায়ককে ১ বছরের জন্য বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করেছিলেন। এই ১২ বিজেপি বিধায়ক হলেন- আশিস শেলার, সঞ্জয় কুতে, অতুল ভাটকাহলকার, গিরিশ মহাজন, জয়কুমার রাওয়াল, যোগেশ সাগর, পরাগ আলভানি, হরিশ পিম্পল,  রাম সাতপুতে, নারায়ণ কুচে, বান্টি ভাঙাড়িয়া এবং অভিমূণ্য পাওয়ার। 
২০২১ সালের ৫ জুলাই এই ১২ বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন শুরু হয়েছিল। এর জন্য মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিশেষ রেজলিউশনও পাশ করানো হয়েছিল। সুপ্রিমকোর্ট শুক্রবার যে রায় দিয়েছে তাতে এই সাসপেনশনকে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রেজলিউশন পাশ করাকে অবৈধ বলে মন্তব্য করেছে। রেজলিউশন পাশ করাকে অবৈধ বলার মধ্যে দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট আসলে বিধানসভার ক্ষমতার এক্তিয়ারকেই প্রশ্ন করেছে। গত সপ্তাহেই এই সাসপেনশন-এর উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট।  

১২ বিজেপি বিধায়কের হয়ে মামলা লড়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহাতগি। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে কোনও জবাবদিহি তলব করা ছাড়াই ১২ বিজেপি বিধায়কের উপর শাস্তির খাড়া ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তাতে এটা পরিস্কার যে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধানসভা। এটাকে কোনওভাবেই নিরপেক্ষ বলা যায় না। এমনভাবে একজন জনপ্রতিনিধিকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা যায় না। এই বিধায়কদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে যেন তাঁদেরকে পুলিশ বলে মনে করছে বিধানসভা। 

আর এক স্বনামধন্য আইনজীবী মহেশ জেঠমালিনীও এই বিধায়কদের হয়ে আইনিযুদ্ধে নেমেছিলেন। সুপ্রিমকোর্টের রায়ের পর তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন, সাসপেনশন-এর উদ্দেশ্য ছিল শৃঙ্খলাপরায়ণ করা। কিন্তু এখানে কোনও শৃঙ্খলাকে বলবৎ করার কথাই চিন্তা করা হয়নি। আর সাসপেনশনকে কখনও অধিবেশনের সময়সীমার বাইরেও বলবৎ করে রাখা যায় না। 

সুপ্রিমকোর্টের রায়েও বিধায়কদের আইনজীবীদের নেওয়া অবস্থানের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। এই সাসপেনশন বিতর্কে বিচারপতির ভূমিকায় ছিলেন এএম কাহনিওলকর, দীনেশ মহেশ্বরী, সিটি রবিকুমার। এরা সকলেই রায়দানে তাঁদের মন্তব্য ব্যক্ত করেন। এরা সকলেই বলেন, ১২ বিজেপি বিধায়ককে যেভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাতে বোঝাই যাচ্ছে এটা অসাংবিধানিক। 

সুপ্রিমকোর্টের রায়েও বিধায়কদের আইনজীবীদের নেওয়া অবস্থানের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। এই সাসপেনশন বিতর্কে বিচারপতির ভূমিকায় ছিলেন এএম কাহনিওলকর, দীনেশ মহেশ্বরী, সিটি রবিকুমার। এরা সকলেই রায়দানে তাঁদের মন্তব্য ব্যক্ত করেন। এরা সকলেই বলেন, ১২ বিজেপি বিধায়ককে যেভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাতে যে এটা অসাংবিধানিক তা প্রমাণিত। 

এদিকে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্টের রায়ের কপি হাতে এলে তা ভালো করে খতিয়ে দেখা হবে এবং তার উপরে ভিত্তি করে বিধানসভার অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেনে। নবাব আরও জানান, এটা শুধু মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধিকার রক্ষার বিষয় নয়, দেশজুড়ে সমস্ত অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার মতো বিষয়ও জড়িত। 

আরও পড়ুন

Why I killed Gandhi: ছবির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানিয়ে চিঠি কংগ্রেসের, তৈরি হচ্ছে বিতর্ক 

'ভারতের প্রধানমন্ত্রী হত শিবসেনার কোনও সদস্য', সঞ্জয় রাউতের নিশানায় আবার বিজেপি 
Happy Birthday Nana Patekar: এত অর্থ থাকা সত্ত্বেও কেন সাধারণ জীবন-যাপন নানা পাটেকরের, জানুন আসল রহস্য