সংক্ষিপ্ত

সোনা পাচার মামলায় তাঁকে ব্যবহার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ে ও স্ত্রী তাঁকে আগেও ব্যবহার করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব স্বপ্না সুরেশ।

 

বিতর্কিত সোনা পাচার মামলায় আবারও অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশের নিশানায় কেরলের সিপিআই(এম) নেতা। ফেসবুকে লাইভে উপস্থিত হয়ে স্বপ্না সুরেশ জানিয়েছেন, সিপিআই(এম) রাজ্য সচিব এমভি গোবিন্নাদন বিজয় পিল্লাই সোনা পাচার মামলার মধ্যস্থতা করার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁকে ৩০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই শেষ নয় স্বপ্নাকে একই সঙ্গে ভিনরাজ্য একটি ফ্ল্যাট দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সত্যের জন্য তিনি লড়াই করবেন। এই দাবি করে সিপিআই(এম) নেতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বলেও জানিয়েছেন স্বপ্না সুরেশ।

স্বপ্না সুরেশ বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানেই তিনি বলেন তিন দিন আগে তিনি একটি আপোস প্রস্তাব পান। আপোস করার জন্য তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তিনি নিশানা করেছিলেন কুন্নুরের বাসিন্দা তথা সিপিআই(এম) নেতা বিজয় পিল্লাইয়ের দিকে। স্বপ্না সুরেশ বলেন সিপিআই(এম) নেতা তাঁকে এলাকা খালি করে দেওয়ার জন্য মাত্র এক সপ্তাহ সময় দিতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন বাচ্চাদের নিয়ে তিনি যেন কেরল ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। তবে স্বপ্নার অন্য ঠিকানারও ব্যবস্থা তিনি করে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন।

স্বপ্না সুরেশ এদিন বলেন, সিপিআই(এম) নেতা তাঁকে বলেছিলেন তিনি, যেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও তাঁর ঘনিষ্টদের বিরুদ্ধে কথা বলা বন্ধ করে দেন। আর তা দিলেই তাঁকে ব্রিটেন বা মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য ভিসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। বিজয় পিল্লাই কুন্নুরের থেকে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। সেইমতই স্বপ্না বেঙ্গালুরুর একটি হোটেলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানেই সোনা পাচার মামলার নিষ্পত্তির প্রস্তাব তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। বিজয় পিল্লাই তাঁকে বলেছিলেন, এই প্রস্তাবে তিনি যদি রাজি না হন তাহলে তাঁকে হত্যা করা হবে। অর্থাৎ খুনেরও হুমকি দিয়েছিলেন। যাইহোক স্বপ্না জানিয়েছেন কোনও হুমকির কাছে তিনি মাথানত করবেন না। তাঁর কাছে যা প্রমাণ রয়েছে সবই তিনি তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেবেন।

স্বপ্না বলেছেন চোরাচালানের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না। তাঁকে ফাঁসান হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী ও কন্যা তাঁকে অনেক কিছুর জন্য ব্যবহার করেছে। জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি মুখ খুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তা করতে দেওয়া হয়নি। এদিন তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ট আইএএস অফিসার শিবশঙ্কর ও অন্যান্যরা মিথ্যা কথা বলছে। তাদের মুখোশ তিনি খুলে ফেলতে চান। আর সেই কারণেই নিজের মতামত প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।

স্বপ্না এদিন আগেই ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন। সেই সময়ই তিনি জানিয়েছিলেন সন্ধ্যায় তিনি আবারও উপস্থিত হবেন। স্বপ্না সাধারণত ফেসবুকে ইংরেজিতে পোস্ট করেন। এদিন তিনি মায়ালমেও পোস্ট করেছিলেন। সেখানেই তিনি বলেছিলেন সোনা পাচার মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে তিনি আবারও ফেসবুক লাইভে উপস্থিত হবেন।

সোনাপাচার মামলায় প্রথম থেকেই অভিযুক্ত ছিলেন স্বপ্না সুরেশ। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট স্বপ্নাকে দীর্ঘ জেরা করেছিলেন। নাম জড়িয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও তাঁর ঘনিষ্ট আধিকারিক শিবশঙ্করের। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে শিবশঙ্করকে। স্বপ্না যে শিবশঙ্করের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন তারও প্রমাণ রয়েছে তদন্তকারীদের হাতে।