সংক্ষিপ্ত

কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বেরিয়ে ধর্ষণ

এমন ঘটনাও ঘটল ভারতে

শিকার হলেন ১৭ বছরের এক কিশোরী

রাজনৈতিক চাপে পুলিশ প্রথমে ঘটনাটি চেপে দিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ

 

করোনাভাইরাস মহামারি রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। সেই সঙ্গে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে আইন-ও কঠোরতর করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে লকডাউন আসেনি। গত সপ্তাহে বিহারের রোহতাস জেলায় এক ১৭ বছর বয়সী কিশোরীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা দুই অভিবাসী শ্রমিক-সহ মোট ছয়জনকে।

পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাতে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের এত ঢক্কানিনাদের পরও ওই কিশোরীর বাড়িতে এখনও শৌচাগার নেই। তাই শৌচকর্মের জন্য চাষের ক্ষেতই ভরসা। ঘটনার দিন রাত ৯টা নাগাদ মেয়েটি ওই গ্রামের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পাশেই একটি চাষের ক্ষেতে গিয়েছিলেন হালকা হতে। সেই সময়ই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পাঁচিল টপকে দুই পরিযায়ী শ্রমিক তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ। মেয়েটিকে কব্জা করে তারা গ্রামে থাকা তাদের আরও চার বন্ধুকেও ফোনে ডেকে আনে। এরপর মেয়েটির উপর চলে ওই ছয়জনের অত্যাচার।

ঘটনার পর, আবার তারা পাঁচিল টপকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ঢুকে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে নির্যাতিতা। তারা সম্ভবত ভেবেছিল লোকলজ্জার ভয়ে গুটিয়ে যাবে মেয়েটি, কিংবা তাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ তাদের বাঁচিয়ে দেবে। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। নির্যাতিতা কোনওমতে ওই অবস্থায় বাড়িতে পৌঁছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছে সবটা খুলে বলে।

এলাকাটি দাওয়াত থানার অধীনে পড়ে। নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার বিষয়ে দাওয়াত থানায় অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু তাদের অভিযোগ, পুলিশ রাজনৈতিক চাপে প্রথমে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, এরপরই নির্যাতিতার পরিবার, ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের সামনে গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকেন। সেইসঙ্গে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার গুরুতর অভিযোগ তোলেন।

এরপর এই ঘটনা নিয়ে জেলায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়। পারিপার্শ্বিক চাপে দেরীতে হলেও কাজে নামে পুলিশ। প্রথমেই মূল অভিযুক্ত ওই দুই পরিযায়ী শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অভিযুক্ত ছয়জনের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করে তাদের সকলকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা জানিয়েছে এই অভিযুক্তরা হল, বিজয় যাদব (২০), সুরেশ যাদব (২২), মুকেশ যাদব (২১), চঞ্চল যাদব (২২), অমিত পাসওয়ান (১৮), এবং কুলি পাসওয়ান (১৮)। সাসারাম সদর হাসপাতালে নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়।

সমস্য়া হল, এই ঘটনার সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণেরও সম্ভাবনা রয়ে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা দুই অভিযুক্ত, চঞ্চল ও সুরেশের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে, তা কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফল ইতিবাচক এলে ঘটনায় জড়িত বাকি চার অভিযুক্ত ও নির্যাতিতারও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করা হবে।