সংক্ষিপ্ত
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। তবে এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না। শীঘ্রই দোষীদের ধরা হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছেন কাশ্মীরের আইজি বিজয় কুমার।
সোমবার সন্ধেয় শ্রীনগরের (Srinagar) উপকন্ঠে জেওয়ান (Zewan) এলাকায় পুলিশের বাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এই ঘটনায় ৩ জন পুলিশকর্মী নিহত ও ১১ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। তবে এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না। শীঘ্রই দোষীদের খুঁজে খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছেন কাশ্মীরের আইজি বিজয় কুমার (Vijay Kumar)।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজয় কুমার জানিয়েছিলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ইন্ডিয়ান রিজার্ভ পুলিশ বা আইআরপি (Indian Reserve Police)-এর নবম ব্যাটালিয়নের ২৫ জন কর্মীকে নিয়ে যাচ্ছিল ওই বাসটি। জেওয়ানের পান্থ চক (Pantha Chawk) এলাকায়, পান্থ চক-খোনমোহ সড়কের উপর আচমকা ২ থেকে ৩ জন জঙ্গি ওই বাসের উপর হামলা চালায়। বাসটি লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় তারা। গুঁড়ো হয়ে যায় বাসের জানলার কাঁচ। এই ঘটনায় ১৪ জন পুলিশকর্মী জখম হন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে তাঁদের মধ্যে তিন জন পরে শহিদ হন। বাকি ১১ জন এখন বিপদমুক্ত। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের (Jammu and Kashmir Police) তরফে জানানো হয়েছে, শহিদ পুলিশকর্মীরা হলেন এএসআই গোলাম হাসান, এসজিসিটি সফিক আলি ও কনস্টেবল রমীজ আহমেদ।
আরও পড়ুন- বাস লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি জঙ্গিদের - মৃত ৩ পুলিশকর্মী, আহত আরও ১১
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বিজয় কুমার বলেন, "পরিকল্পনা মাফিক এই হামলা চালিয়েছিল দুই বিদেশি ও এক দেশিয় জঙ্গি। এই ঘটনায় তিনজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পাল্টা পুলিশের গুলিতে জখম হওয়ার পর কোনওরকমে ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এক জঙ্গি। শীঘ্রই তাকে ধরা হবে।"
'কাশ্মীর টাইগার্স' (Kashmir Tigers) নামে স্থানীয় এক জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। আসলে জইশ-ই-মহম্মদের সংগঠনেরই কাশ্মীরের শাখা সংগঠন তারা। বিজয় কুমার জানান, গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন তাঁরা। হামলার পরই পুরো এলাকা ঘিরে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। তবে এখনও পর্যন্ত জঙ্গিদের খোঁজ মেলেনি। আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় পুলিশের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই জঙ্গিদের হদিশ পাওয়া যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাস্তায় নামেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা। শহিদ তিন পুলিশকর্মীর স্মরণে মোমবাতি মিছিল করেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে একজন বলেন, "আমরা কাশ্মীরে জন্মেছি এটা আমাদের দোষ নয়। কেন মানুষ আমাদের সুন্দর জায়গাকে নরকে পরিণত করার চেষ্টা করছে?"
এদিকে পান্থচক এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর একাধিক শিবির-সহ নানা সরকারি দফতর রয়েছে। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা ওই এলাকায় কীভাবে জঙ্গিরা বিনা বাধায় এসে হামলা চালিয়ে পালিয়ে গেল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, এই হামলার সঙ্গে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের বাসে হামলা চালানোর ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। ওই হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ৪০ জন জওয়ান।