সংক্ষিপ্ত

১৩ বছরের ছেলে জাস তার ভাইবোন যশ, মেহক এবং আস্থার সাথে খেলছিল। জাস আত্মহত্যা নকল করার চেষ্টা করলে আচমকা দুর্ঘটনা ঘটে। সে যে টুলটির ওপর দাঁড়িয়ে তার গলায় ফাঁস রেখেছিল, তা তার পায়ের কাছ থেকে দূরে পড়ে যায়।

উত্তরপ্রদেশের জালাউনে মর্মান্তিক মৃত্যু ১৩ বছরের এক শিশুর। দৃষ্টিহীন মায়ের সামনেই ছটফট করতে করতে মৃত্যু হল সন্তানের। জানা গিয়েছে, শিশুটি তার ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলা খেলছিল। গলায় ফাঁস লাগিয়ে একটা টুলের ওপর দাঁড়িয়ে আত্মহত্যার নকল করতে গিয়েছিল সে। আচমকা এসময় পায়ের নিচ থেকে টুল সরে গিয়ে সে ঝুলে যায়। এরপরেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সে। ভাই-বোন একসঙ্গে খেলার সময় চিৎকার শুরু করলে পাশের ঘরে ঘুমন্ত মা ছুটে আসলেও দৃষ্টি না থাকায় সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি।

জালাউনের ওরাইয়ের কাশিরাম কলোনিতে বসবাসকারী ৫০ বছর বয়সী সঙ্গীতা জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। ঘটনার সময় তিনি একটি ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। তার স্বামী খেমচন্দ্র বাজারে গিয়েছিলেন। তাদের ১৩ বছরের ছেলে জাস তার ভাইবোন যশ, মেহক এবং আস্থার সাথে খেলছিল। জাস আত্মহত্যা নকল করার চেষ্টা করলে আচমকা দুর্ঘটনা ঘটে। সে যে টুলটির ওপর দাঁড়িয়ে তার গলায় ফাঁস রেখেছিল, তা তার পায়ের কাছ থেকে দূরে পড়ে যায়। তার গলা শক্ত হয়ে যাওয়ায় সে প্রচন্ডভাবে হাত পা ছুঁড়তে থাকে। তার ভাইবোনেরা ভেবেছিল তখনও অভিনয় করছে সে। কিন্তু তারপরে জাসের মুখ ও নাক থেকে রক্তপাত শুরু হয়।

তা দেখে বাকি ভাইবোনের চিৎকার শুরু করে। আওয়াজ শুনে পাশের ঘরে ঘুমন্ত সঙ্গীতা দৌড়ে সেখানে গেলেও তার অন্ধত্বই তার সন্তানকে তার সামনে মারা যাওয়া থেকে বাঁচাতে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সঙ্গীতা ফাঁস কাটার জন্য ছুরি বা কাস্তে খুঁজতে থাকে কিন্তু কিছুই পায়নি। সে অনেকক্ষণ ভয়ে এদিক ওদিক দৌড়াতে থাকে। তারপর তিনি প্রতিবেশীদের কাছে সাহায্য চাইলেন কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

আশপাশের কিছু লোকজন আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে ফাঁদ থেকে নামিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর সামনে সন্তানের মৃত্যুতে শোকে পাথর সঙ্গীতা। তিনি বলেন ভগবান যদি আমার দৃষ্টি কেড়ে না নিতেন তাহলে আমি আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারতাম। সে আমার সামনে মারা গেল আর আমি কিছুই করতে পারলাম না।