সংক্ষিপ্ত

ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৭৩

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে করোনাভাইরাস এখন বিশ্বব্যপী মহামারী

কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যগুলিকে 'মহামারী রোগ আইন' প্রয়োগ করতে বলা হল

১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল এই আইন

 

ভারতে নভেল করোনভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩-এ পৌঁছেছে। এরমধ্যে ১৭ জন বিদেশি, বাকিরা ভারতীয়। দিন দিন এই প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এরমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস সংক্রমণ-কে 'প্যানডেমিক' অর্থাৎ বিশ্বব্যপী মহামারী-র আখ্যা দিয়েছে। এরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসবার সচিব সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি-তে ১৮৯৭ সালের 'মহামারী রোগ আইন'-এর ২ নম্বর ধারা প্রয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছে।

বুধবার রাতে দিল্লিতে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবরা ছাড়া সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা,এবং আইটিবিপি-র প্রতিনিধিরা ছিলেন। জেনে নেওয়া যাক ১৮৯৭ সালের এই আইনে ঠিক কী বলা হয়েছে -

ব্রিটিশ আমলের এই আইনটি 'বিপজ্জনক মহামারী রোগ'-এর বিস্তারকে আরও ভালভাবে প্রতিরোধ করার জন্য করা হয়েছিল। সেইসময় বম্বে (এখনকার মুম্বই) রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া বুবোনিক প্লেগ-এর মহামারী মোকাবিলায় ব্রিটিশরা এই 'মহামারী রোগ আইন' চালু করেছিল। ঔপনিবেশিক ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল মহামারী নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন। এই আইনেরই দ্বিতীয় ধারাটি প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই অংশে রোগের বিস্তার রোধে বিশেষ ব্যবস্থা ও বিধিনিষেধ জারির জন্য রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়। সেই সঙ্গে এই অংশে একটি বিশেষ উপধারা-ও যোগ করা হয়েছিল। এই উপধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার মহামারী ছড়িয়ে পড়া রোধে সরকার বাইরে থেকে আগত যে কোনও ব্যক্তিকে তদন্ত করার এবং আটক করে রাখার ক্ষমতা পায়।

এই আইনের ধারা অনুসারে, রাজ্যের কোনও অংশে কোনও বিপজ্জনক মহামারী রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে যদি রাজ্য সরকার মনে করে যে আইনের সাধারণ বিধানে তা ঠেকানো সম্ভব নয়, তখন রাজ্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এইসব ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে রেলপথে বা অন্যভাবে ভ্রমণকারী ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা, হাসপাতালে বা অস্থায়ী আবাসে বিচ্ছিন্ন করে রাখার বিষয়। আর বিশেষ ক্ষমতাবলে রাজ্যের প্রয়োগ করা সেই সব বিধিনিষেধ না মানলে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় শাস্তিই হতে পারে।

২০০৯ সালে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিকেল এথিক্স-এর একটি গবেষণাপত্রে অবশ্য এই আইনটিকে ঔপনিবেশিক ভারতে গৃহীত স্বাস্থবিধি সংক্রান্ত আইনগুলির মধ্যে সবচেয়ে কঠোর হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল।