সংক্ষিপ্ত

উত্তর ত্রিপুরার জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী জানিয়েছেন রামুহাই রেয়াং ও তার ১৪ বছরের ছেলে রথীন্দ্র কাঞ্চনপুর মহকুমার বাসিন্দারা। তারা প্রায়ই কৃষি কাজের জন্য মিজোরামে যেতেন। 


আবারও উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে বিবাদ সামনে এল। এবার মিজোরাম (Mizoram) ও ত্রিপুরার (Tripura) মধ্যে সমস্যা দেখা দিল। ত্রিপুরার ৪০ বছরের এক ব্যক্তি ও তার কিশোর পুত্রকে একসঙ্গে গুলি করার অভিযোগ উঠল মিজোরামের পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার মিজোরাম পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, পিতা-পুত্র মিজোরামের সীমানা অতিক্রম করেছিল। তাই গুলি করা হয়েছে। পিতা ও পুত্র ঝুম চাষ করছিল। চাষের কাজের জন্য প্রতিবেশী রাজ্যে গিয়েছিল বলেও দাবি স্থানীয়দের। 


উত্তর ত্রিপুরার জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী জানিয়েছেন রামুহাই রেয়াং ও তার ১৪ বছরের ছেলে রথীন্দ্র কাঞ্চনপুর মহকুমার বাসিন্দারা। তারা প্রায়ই কৃষি কাজের জন্য মিজোরামে যেতেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে মিজোরাম পুলিশ পিতা ও পিত্রকে একসঙ্গে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।  কিন্তু কী কারণে গুলি চালিয়ে তা এখনও অস্পষ্ট। তবে দুজনেই গুরুতর আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ। 


ত্রিপুরা পুলিশ আরও জানিয়েছেন, মিজোরামের পুলিশের দাবি পিতা ও পুত্র মাদক নিয়ে অবৈধভাবে সামীনা পায় হয়ে মিজোরামে ঢুকে ছিল, তাই তাদের লক্ষ্য করে  গুলি চালান হয়েছে। এই ঘটনার পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রামুহাই রেয়াং কোনও রকমে সীমানা পার হয়ে ত্রিপুরায় ঢুকে যেতে পারেন। কিন্তু তাঁর ছেলে রথীন্দকে গুলু বিদ্ধ অবস্থায় মিজোরামের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে রামুহাইয়ের চিকিৎসা চলছে। ছেলেকে আইজলের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিজো পুলিশ। ছেলের অবস্থা সংকটজনক হলেও বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে বলেও জানান হয়েছে। 

ভ্যাংমুন থানায় একটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে। গোটা ঘচনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সীমানায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে। সম্প্রতি আসম ও মিজোরাম পুলিশের মধ্যেই সীমানা অতিক্রম নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেইসময়ও গুলি চলেছিল। 

দুই প্রতিবেশী রাজ্য সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজন হয়েছিল যে গুলিয়ে অসমের ৬ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্যণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। অসম সরকার তার রাজ্যের বাসিন্দাদের মিজোরাম সফরে না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি মিজোরাম থেকে আসা সমস্ত গাড়ি পরীক্ষা করার বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে হেমন্ত বিশ্ব শর্মারস সরকার। 

বৃহস্পতিবার অসম সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিজোরাম থেকে অসমে প্রবেশ করা সমস্ত গাড়ি পরীক্ষা করা হবে। অবৈধ ওষুধের অনুসন্ধানের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তির পক্ষে সওয়াল করে অসম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত দুমাসে ৯১২টি মমালা দায়ের করা হয়েছে বিপুলপরিমাণে মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৫৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসম পুলিশের পক্ষ থেকে জিপি সিং টুইট করে জানিয়েছেন, মিজোরামসহ বাইরে থেকে আসছে মাদকদ্রব্য। যা অসম প্রশাসককে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই সহযোগিতার আবেদনও করেছেন তিনি।