সংক্ষিপ্ত

  • তথাগত রায়, এই মুহূর্তে ত্রিপুরার রাজ্যপাল।
  • পুরনো সংঘসেবক বলে পরিচিত তামাম ভারতবর্ষে।
  • হিন্দির স্বপক্ষে মুখ খুলে লজ্জিত করলেন গোটা বাংলাকেই।
  • তাঁর মন্তব্যে উত্তাল নেটদুনিয়া।

তথাগত রায়। এই মুহূর্তে ত্রিপুরার রাজ্যপাল। পুরনো সংঘসেবক বলে পরিচিত তামাম ভারতবর্ষে। হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনাটিকে নিয়ে যখন সারা দেশে তুমুল সমালোচনার মুখে, তখন হিন্দির স্বপক্ষে মুখ খুললেন তিনি। নিজের টুইটারে লিখলেন, "এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বাইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল "

খুব স্বাভাবিক ভাবেই বোঝা যাচ্ছে, মহিলাদের ইচ্ছে-অনিচ্ছায় পেশা বাছাইকে কটাক্ষ করছেন। এবং পেশার জন্য বাধ্যত একটি ভাষা শিখে নেওয়াকে প্রতিতুলনায় এনে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে শাগরেদি করছেন। বলাই বাহুল্য, এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ত্রিপুরার মাননীয় রাজ্যপাল যে পেশার কারণে মানুষকে হীন চোখে দেখেন তাও তাঁর মন্তব্যে পরিষ্কার, এমনটাই মনে করছেন নেটিজেনরা।

হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থান, গেরুয়াকরণের এই সোজা রাস্তায় তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলকই হল হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মানুষের মগজে চালান করা এবং হিন্দি শেখা বাধ্যতামূলক করা। সেই মর্মেই সওয়াল করছেন তথাগত রায়। এই টুইট সিরিজেই তিনি লিখেছেন, "তামিলনাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে। অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ছাড়া ইংরিজি কেউ বুঝবে না যাঁরা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তাঁরা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে না হলে পস্তাতে হবে।" 

বলাই বাহুল্য তথাগতর এই সওয়াল খুব তথ্যবহুল নয়।  ২০১১ সালের জনগণনায় দেখা গিয়েছে, ১২১ কোটি ভারতের মধ্যে ৫২ কোটি ভারতীয় হিন্দি বুঝতে সক্ষম কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এই জনসংখ্যার প্রত্যেকেই আদতে জন্মাবধি হিন্দিভাষী। ৩২ কোটি লোকের মাতৃভাষা হিন্দি।  শতকরার হিসেবে বুঝিয়ে বললে ৪৪ শতাংশ মানুষ হিন্দি বুঝতে ও বলতে পারেন এবং মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা তথা মাতৃভাষা হিন্দি। তথাগতর যুক্তি মানলে, ভারতের ৬৬ শতাংশ মানুষ তামিলনাড়ুতে থাকেন।

প্রসঙ্গত এই প্রথম নয়, শিবপুর বিই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, মেট্রোরেলের একদা শীর্ষকর্তা অতীতেও লাগামছাড়া মন্তব্য করেছেন নানা সময়। অতীতে পাক গজল গায়ক গুলাম আলির ভারতে আসা নিয়েও তাঁর মন্তব্য় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে। সাংবিধানিক পদটির কথা মাথায় না রেখেই একটি বিশেষ দল ও মতের পক্ষে মত দিয়ে গিয়েছেন ছাত্রজীবন থেকেই সংঘসেবক হিসেবে কাজ করা ত্রিপুরার রাজ্যপাল।