সংক্ষিপ্ত

নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) নির্দেশে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে (Uttar Pradesh Elections 2022) এবার চলছে ডিজিটাল প্রচার (Digital Campaign)। বিজেপি (BJP), সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party), কংগ্রেস (Congress) না বসপা (BSP) - ডিজিটাল প্রচার যুদ্ধে কারা এগিয়ে? 
 

নির্বাচনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রচার। সারা বছর কাজকর্ম না করেও স্রেফ প্রচারের অভিনবত্ব ও ব্যাপকতায় উতরে যেতে পারে যে কোনও রাজনৈতিক দল। তাই প্রচার নিয়েও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে। আর আসন্ন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে এই প্রচারের লড়াইয়ে একটা নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে জারি করা নির্বাচন কমিশনের নতুন নিয়ম। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনও শারীরিক জনসভা, পদযাত্রা, সাইকেল র‌্যালি, বাইক র‌্যালি, রোড শো ইত্যআদি করা যাবে না। তাই, রাজনৈতিক দলগুলি এখন ডিজিটাল নির্বাচনী প্রচারের দ্বারস্থ। আর, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পর ডিজিটাল মাধ্যম কে বেশি দখল করতে পারবে, শুরু হয়েছে তার প্রতিযোগিতা। দেখে নেওয়া যাক, ডিজিটাল প্রচারে কোন দল কতটা সাড়া ফেলতে পারল - 

বিজেপি 

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সবথেকে বেশি সুবিধা পেয়েছে বিজেপি, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বাকি দলগুলি যখন ঠেকায় পড়ে তাদের ডিজিটাল বিশ্বে তাদের অবস্থান মজবুত করছে, বিজেপির আইটি সেল আগে থেকেই দারুণ মজবুত। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডিজিটাল প্রচারের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন দলকে। তখন থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। ভার্চুয়াল সমাবেশের জন্য তারা থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাদের দখল দৃশ্যমান। ইতিমধ্যেই বুথ স্তরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টুইটার হ্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ভার্চুয়াল সমাবেশের আয়োজনে এগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল সমাবেশের পাশাপাশি বুথে বুথে কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছেন।

সমাজবাদী পার্টি

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভার্চুয়াল সমাবেশের পরিকল্পনা করেছেন। সপার বিভিন্ন ইউনিট বুথ পর্যায়ে ভার্চুয়াল মিটিং করছে। বুথে প্রতি একজন করে কর্মীকে নিযুক্ত করা হচ্ছে, যিনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে সংযোগ রাখবেন এবং দলের কাজ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করবেন। তবে, অনেক জেলাতেই সমাজবাদী পার্টির কর্মীদের দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবের মাধ্যমেই সপা দল মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

কংগ্রেস 

ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস দল তাদের সমস্ত নির্বাচনী সমাবেশ বাতিল করেছে। তার বদলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর দল। পাশাপাশি, প্রধান প্রধান বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে তাদের তারকা প্রচারকদের পাঠানো হচ্ছে। তাদের সাংবাদিক বৈঠক এবং দরজায় দরজায় প্রচারের কাজে লাগানো হচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র, পার্টির ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলিতে 'লাইভ উইথ প্রিয়াঙ্কা' নামে একটি লাইভ সেশন করছেন। এই লাইভ সেশনে যে কোনও মানুষ সরাসরি কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

বহুজন সমাজ পার্টি

অন্যান্য দলগুলির তুলনায়, ভার্চুয়াল মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে বেশ পিছিয়ে রয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি। বিশিষ্ট বিএসপি নেতা সতীশচন্দ্র মিশ্র বর্তমানে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে সমাবেশ করা শুরু করেছেন। তবে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি যেভাবে ভার্চুয়াল মাধ্যমকে কাজে লাগানোর জন্য তেড়েফুড়ে নেমেছে, সেই পর্যায়ে পৌঁছোচ্ছে না বসপার রণকৌশল। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে পার্টির প্রচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বাস্তবের মাটিতে বিশেষ কাজ হচ্ছে না।