সংক্ষিপ্ত

চিকিৎসা শাস্ত্রে যে রোগের বহুল প্রচলিত নাম ‘মৃগী’, সেই মৃগীকেই ‘ভুতের ভর’ বলে ভয় দেখিয়ে দিলেন এক ওঝা বা তান্ত্রিক। সেই ভয় থেকেই শুরু হল ভুল বোঝানো।

দিনের পর দিন ধরে আচমকাই শরীরে খিঁচুনি হত ১৪ বছরের কিশোরীর। গ্রামের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি। বিগত তিন বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা করালেও নিরাশই হতে হচ্ছিল উত্তর প্রদেশের কিশোরীর মা-বাবাকে। ৩ বছর ধরে বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ কিশোরীর চিকিৎসা চললেও কোনও সুরাহা পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা শাস্ত্রে যে রোগের বহুল প্রচলিত নাম ‘মৃগী’, সেই মৃগীকেই ‘ভুতের ভর’ বলে ভয় দেখিয়ে দিলেন এক ওঝা বা তান্ত্রিক। সেই ভয় থেকেই শুরু হল গোলমাল।

তন্ত্রসাধনা করে ওই তান্ত্রিক অসুস্থ কিশোরীকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন, এই আশাতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তার মা। কিন্তু ঝাড়ফুঁকের নামে মেয়ের ওপর যে এমন পৈশাচিক অত্যাচার চলবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি অসহায় মহিলা। তন্ত্রসাধনার নামে মায়ের অনুপস্থিতিতে ১৪ বছরের ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উত্তর প্রদেশের কৌসাম্বী জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। ১৪ বছরের অসুস্থ কিশোরীকে ধর্ষণ করেন প্রায় ৪৫ বছর বয়সী ওই তান্ত্রিক। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত।

নির্যাতিতার মা জানান, বিগত তিন বছর ধরে এপিলেপ্সি রোগে ভুগছে তাঁর মেয়ে। শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়েছিল। কিন্তু, কোনও চিকিৎসাতেই সুফল মেলেনি। গত ২৪ ডিসেম্বর আচমকাই বাড়িতে আসেন ওই তান্ত্রিক। সেই সময় কিশোরীর বাবা বাড়ি ছিলেন না, মেয়েকে নিয়ে একাই ছিলেন তিনি। ওই তান্ত্রিক তাঁকে বোঝান যে তাঁর মেয়ের উপরে ‘দুষ্ট আত্মা’ ভর করেছে। তিনি মন্ত্র পড়ে সেই আত্মা তাড়িয়ে দিতে পারবেন।

ওই ব্যক্তির কথায় ভরসাও করে নেন মহিলা। তান্ত্রিক তাঁর মেয়েকে ফাঁকা একটি জায়গায় নিয়ে যায়, সেখানে তাঁকে আসতে বারণ করেন তিনি। পরে কিশোরী যখন নিজের বাড়িতে ফিরে আসে, তখন তার ছেঁড়া পোশাক ও শরীরের আঘাত দেখে গোটা বিষয়টি বুঝতে পারেন তার বাবা মা। এরপরেই পুলিশে অভিযোগ করেন নির্যাতিতার বাবা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।


আরও পড়ুন-
স্কুলের অন্দরেই ছাত্রছাত্রীদের মিলবে ‘গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি’, বড় সিদ্ধান্ত রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের
নোট বাতিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্টে মোদী সরকারের বড় জয়
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দফতর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ফোন, নাগপুরে কড়া পুলিশি প্রহরা