সংক্ষিপ্ত
উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়ালে ধ্বস নেমে মৃত্যু হয় পাঁচজন পর্বতারোহীর। তুষারধ্বসের কারণেই এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ২২ জনের একটি পর্বতারোহী দল।
উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়ালে আবারও ভয়াবহ তুষারধ্বস।উত্তরকাশির "দ্রৌপদী কি ডান্ডা -২" শিখরের কাছে ধ্বস নেমে মৃত্যু হয় পাঁচজন পর্বতারোহীর। প্রবল তুষারধ্বসের কারণে মঙ্গলবার থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল তাদের সঙ্গে । অবশেষে বৃহস্পতিবার উত্তরকাশির "দ্রৌপদী কি ডান্ডা -২" শিখরের কাছ থেকে মিললো তাদের দেহ। এখনো পর্যন্ত মোট ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল । তবে পর্বতারোহন সংস্থা " নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিংয়ের" তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে এখনও ২২ জনের একটি পর্বতারোহী দল নিখোঁজ।
উত্তরকাশীতে কিছুদিন আগেও তুষারধসে মৃত্যু হয়েছিল ১০ জনের। তার দুদিন পর আবার এমন দুর্ঘটনায় নড়ে ছোড়ে বসছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ট্রেকিং এর অনুমোদন দেয়ার আগে কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরির কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন তারা। দুর্গম ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আর কোনো অভিযাত্রিকে যাতে এইভাবে প্রাণ হারাতে না হয় সে বিষয়টিতেও নজর দেবেন তারা।
ধ্বসের খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই উদ্ধারকারী দোল পৌঁছেছে সেখানে। সূত্রের খবর তারা আরও কয়েকটি মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছেন কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে সেগুলি উদ্ধার করা এখনও সম্ভবপর হয়নি। তাছাড়াও দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ১৭০০০ ফুট উচ্চতায়। এতো উঁচুতে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো টাও খুব একটা সহজ হবে না বলেই জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলটির প্রধান।
সূত্রের খবর "দ্রৌপদী কি ডান্ডা -২" অভিযানের জন্য নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং এর ৪১ জনের একটি দল। এই দলে ছিলেন ৯ জন প্রশিক্ষক ও বাকিরা অভিযাত্রী।জানা গেছে অভিযাত্রীরা দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, আসাম ও হরিয়ানার বাসিন্দা। ছিলেন। এই দলের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৭ জন প্রশিক্ষকসহ মোট ১২ জন অভিযাত্রিকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।রাজ্য পুলিশের মতে, এই ১২ জন আহত পর্বতারোহীকে মাতলির আইটিবিপি ক্যাম্পে এয়ারলিফ্ট করে আনা হয়েছে এবং যে নয়জন অভিযাত্রী সামান্য আঘাত পেয়েছিলেন তাদের নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং (এনআইএম) এ ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এই দলে স্থানীয় কিছু মালবাহকও ছিলেন বলে উত্তরপ্রদেশ সরকার সূত্রে খবর। যে চারজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে তার মধ্যে ছিলেন এভারেস্টজয়ী তথা নিমের প্রধান সবিতা কাঁসওয়াল ছন্দ গায়েনের পর ইনিই দ্বিতীয় মহিলা এভারেস্টজয়ী যার মৃত্যু হলো হিমালয় দুর্ঘটনায়। এভারেস্টজয়ী সবিতা কাঁসওয়াল উত্তরকাশীর লংথ্রু গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
শোনা যায় "দ্রৌপদী কি ডান্ডা -২" শৃঙ্গটি ৫৬৭০ মিটার উঁচু। এই অঞ্চলটি প্রচন্ড দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চল বলেও পরিচিতি। আর এই অঞ্চলের পাহাড়ি ঢালগুলি খাড়া হাওয়ায় ঢালের গা বেয়েই তুষারের স্তুপ ধ্বসেই প্রবল তুষারধ্বস নেমেছিল বলে বিশেষ্যজ্ঞদের একাংশের দাবি। তবে উদ্ধার কার্যে তৎপরতা দেখাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। নিখোঁজদের সন্ধান পেতে মরিয়া উত্তরপ্রদেশের উদ্ধারকারী দল। স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এসডিআরএফ), ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ), ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) এবং ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) হেলিকপ্টার দ্বারা এনআইএম-এর পর্বতারোহীদের
উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে জোরদার ।ভারতীয় বায়ুসেনা উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার কাজের জন্য দুটি চিতা হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। বুধবার, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এলাকাটির একটি পরিদর্শন করেছেন হেলিকপ্টারে।