সংক্ষিপ্ত

রবিবারই হান্দওয়ারা সংঘর্ষে পাঁচ সেনা জওানের শহিদ হওয়ার খবর জানা গিয়েছিল

তার ২৪ ঘন্টা পরই কি প্রতিশোধ নিল সেনা

এরকমই এক হামলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে

এই ভিডিওটি কি সত্যিকারের, না ভুয়ো

রবিবার সকালেই জানা গিয়েছিল হান্দওয়ারায় লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২১ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর কমান্ডার কর্নেল আশুতোষ শর্মা-সহ আরও চার জওয়ান শহিদ হয়েছেন। রাত হতে না হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বার্তা, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভারতীয় সেনা ওই ঘটনার বদলা নিয়েছে। সেই বদলার ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়।

সেই ভিডিওটি স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই শেয়ার করেছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি সেনা ঘাঁটির বাইরে বসে পাক রেঞ্জার বা তাদের সমর্থিত জঙ্গি সদস্যরা স্যাটেলাইট ফোনে কথা বলছে। ভিডিওটি যিনি তুলেছেন, তাঁকে ৩,২,১ গুণে ছত্রপতি শিবাজির নামে জয়ধ্বনি দিতে শোনা যায়। তারপরই ভারতীয় সেনার স্নাইপার থেকে বুলেট গিয়ে ফুঁড়ে দেয় অন্তত তিনজন পাক সেনা বা জঙ্গির দেহ। তাদের মধ্যে একজনের দেহ মাটিতে না পড়ে যাওয়ায়, তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পর পর বেশ কয়েকটি গুলি চালানো হয় তাকে লক্ষ্য করে।

ভিডিওটি এক পাঠক এশিয়ানেট নিউজ বাংলার সম্পাদক-এর কাছে পাঠিয়ে ভিডিওটির সত্যতা জানতে চেয়েছিলেন। বস্তুত, কোন জঙ্গি বা পাক সেনার হামলার ২৪ ঘন্টা না পার করতেই ভারতীয় সেনাবাহিনী জবাব দিয়েছে সাম্প্রতিককালে তা অনেকবারই দেখা গিয়েছে। কাজেই সেই ঘটনায় বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। যেটা খটকা জাগিয়েছিল, তা হল হামলার ভিডিও এত দ্রুত মিলল কীকরে? কারণ সাধারণত কোনও অভিযানের ভিডিও সেনার তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়, সেই অভিযানের অনেকটাই পরে। ভিডিওগুলি প্রকাশ করলে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে কি না, তা যাচাই করার পরই সেই সব ভিডিও জনসমক্ষে আনা হয়।

তাই ভিডিওটি থেকে কিছু স্ক্রিনশট নিয়ে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বিপরীতমুখী অনুসন্ধান চালানো হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটি কোনও কারিকুরিতে তৈরি করা নয়। ভিডিওটি সত্যি সত্যিই একটি পাক সেনা তথা জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার স্নাইপার হামলার ভিডিও। ভিডিওটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু, ২০১৯ সালেই ভিডিওটি প্রথম ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়েছিল। বস্তুত, বিশদ অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, ভিডিওটি পুলওয়ামা হামলার আগের কোনও এক সময়ের ভিডিও, প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের প্রথম দিকে।     

কাজেই, হান্দওয়ারার বদলা নেওয়া এখনও বাকি। তবে ভিডিওটি থেকে এটা পরিষ্কার, ঠিক কতটা নিখুঁতভাবে হামলা চালাতে সক্ষম ভারতীয় সেনা। কিন্তু, হান্দওয়ারা-র প্রতিশোধ হিসাবে ভিডিওটি চালানো ঠিক নয়। বস্তুত, এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলির লড়াই চলছে পাক ও ভারতীয় সেনার।