সংক্ষিপ্ত


হিন্দু মন্দিরগুলি (hindu Temples) সরকারি নিয়ন্ত্রণ-মুক্ত করতে আন্দোলনে নামছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)। তামিলনাড়ু (Tamil Nadu) সরকারের কাছে তারা ধর্মান্তর বিরোধী আইন (Anti-conversion Law) প্রবর্তনের দাবিও জানালো। 

হিন্দু মন্দির (hindu Temples) ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার দাবি জানালো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)। ভিএইচপি হিন্দু ধর্মের সাধু-সন্তদের একত্রিত করে এই দাবির সপক্ষে প্রচার শুরু করেছে। সাধু-সন্তদের নির্দেশনাতেই এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বলেছে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরের ওপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে না। একইসঙ্গে তামিলনাড়ু (Tamil Nadu) সরকারের কাছে ধর্মান্তর বিরোধী আইন (Anti-conversion Law) প্রবর্তন করার দাবিও জানিয়েছে ভিএইচপি।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার (Alok Kumar), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্থানানুমলয়ন (Sthananumalayan) প্রমুখ তামিলনাড়ুতে ভিএইচপি কর্মীদের সঙ্গে এবং সেখানকার খ্যাতনামা সাধু-সন্তদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। রাজ্যজুড়ে ঋষি-সাধুদের সঙ্গে বৈঠক করে কৌশল তৈরি করা হচ্ছে। দক্ষিণ ভারতে বড় মাপের আন্দোলনে নামতে চলেছে ভিএইচপি, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। 

চলতি বছরের জুলাই মাসে ভিএইচপি-র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সভায় হিন্দু মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের প্রস্তাব পাস করা হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বোর্ড অব ট্রাস্টি মনে করে হিন্দু মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। ভারতে মন্দিরগুলি হিন্দু সমাজের সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আসেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র, উৎসব, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রকল্প বা কার্যক্রম - এই হিন্দু মন্দিরগুলিই পরিচালনা করে। 

ভিএইচপির বক্তব্য, মন্দিরের অর্থ সরকারি নিয়ন্ত্রণে অযৌক্তিক উপায়ে খরচ করা হয়। এতে হিন্দু ঐতিহ্যের ক্ষতি হয়। 'মাদ্রাজ হিন্দু ধর্মীয় এনডাউমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯২৬' (The Madras Hindu Religious Endowment Act, 1926) - ব্রিটিশ আমলে প্রণীত হয়েছিল। এই আইনের বলে ব্রিটিশ সরকার ভারতের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক ভার গ্রহণ করেছিল। এই 'কালা আইন'এর আড়ালে এখনও হিন্দু মন্দিরগুলি অধিগ্রহণ করা চলছে বলে দাবি করেছে ভিএইচপি। এই বিষয়ে তারা চিদম্বরম নটরাজ মন্দির মামলায় (Chidambaram Nataraja Temple Case), মাদ্রাজ হাইকোর্টের (Madras High Court) পর্যবেক্ষণের কথা তুলে ধরছে। আদালত বলেছিল, হিন্দু মন্দিরগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে হবে।

ভিএইচপি সাফ জানিয়েছে, সরকার মন্দিরের মালিক হতে পারে না। সরকার এবং আইন আদালতের মন্দিরের বিষয়ে ভূমিকা খুবই সামান্য। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তামিলনাড়ু সরকার মন্দিরের সম্পত্তি নগদীকরণের জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে চলেছে। হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এর এক্তিয়ার শুধু মন্দিরের ট্রাস্টিদেরই রয়েছে, সরকারের নয়।

একই সঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, তামিলনাড়ু সরকারকে ধর্মান্তর বিরোধী আইন প্রণয়নের আহ্বানও জানিয়েছে। পরিষদ বলেছে, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে হিন্দুদের ধর্মান্তরকরণ রোধ করতে হবে এবং এর ফলে হিন্দু সমাজ, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভয়ভীতি, অযাচিত চাপ, লোভ এবং অন্যান্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে প্রতারিত হবে না। ধর্মান্তরের নামে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডও (Anti-national Activities) বন্ধ হবে।