সংক্ষিপ্ত

কেরলে শোরগোল দুটি দৈত্যাকৃতি কাঁঠাল নিয়ে

অল্প কয়েকদিনের এদিক ওদিকেই কাঁঠাল দুটি ফলেছে

দুটিরই ওজন ৫০ কিলোগ্রামের বেশি

দুটিই নাম দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর দৌড়ে

 

কেরলে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল ফলে। বহু বাড়ির উঠোনেই কাঁঠালগাছ থাকে। অবহেলায় পড়ে থাকে। তার মধ্য়েই হইচই ফেলে দিল একটি নয় একেবারে দু-দুটি কাঁঠাল। অল্প কয়েকদিনের এদিক ওদিকেই এই কাঁঠালদুটি ফলেছে, আর দুটিরই ওজন অবিশ্বাস্য হলেও ৫০ কিলোগ্রামের বেশি! কেরলের এই দুই কাঁঠালই এখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নথিভুক্তির অপেক্ষা করছে।

কেরলের কোল্লাম জেলার এডামুলাক্কাল গ্রামের বাসিন্দা জন কুট্টি। লকডাউনের জন্য অনেকদিন তিনি বাড়ির বাইরে বের হননি। গত সপ্তাহান্তে তিনি অনেরদিন পর তাঁর উঠোনের পিছনের দিকের কাঁঠাল গাছে উঠেছিলেন কাঁছাল পারার জন্য। এর আগেও ওই গাছে অনেক বড় বড় কাঁঠাল হয়েছে, কিন্তু জন কুট্টি জানিয়েছেন, ওই দিন গাছে উঠতে উঠতেই ওই ফলটি দেখে তাঁর কিছুটা অস্বাভাবিক লেগেছিল। পরে তার আকার বুঝতে পেরে আত্মীয়দের ডেকে আনেন সহায়তার জন্য। তারপর একটি বিশাল দড়ি ব্যবহার করে তিন-চারজনে মিলে ফলটি নিচে নামাতে সক্ষম হন।

ওই পেল্লাই কাঁঠাল দেখে স্বাভাবিকভাবেই সকলেই বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তার মাপজোক করার কথা এসেছিল মাথায়। ফিতে দিয়ে মেপে দেখা যায় মাটি থেকে বিশাল ফলটির উচ্চতা ৯৭ সেন্টিমিটার আর ওজন করে তো কারোর বিশ্বাসই হচ্ছিল না, ৫১.৫ কিলোগ্রাম। এরপরই কুট্টি তার বাড়ির কাছের এক কৃষি অফিসার-এর মাধ্যমে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তারা জানিয়েছে, লকডাউনের মধ্যে একটু দেরি হচ্ছে, তবে যত শীঘ্র সম্ভব তাদের প্রতিনিধিরা কুট্টির বাড়ি যাবেন ফলটির আনুষ্ঠানিক মাপ ও ওজন নিতে। গিনেস বুকে বর্তমানে সবচেয়ে বড় কাঁঠালের বিশ্বরেকর্ডটা রয়েছে ভারতেরই একটি কাঁঠালের হাতে। ২০১৬ সালে পুনে-তে ওই নজির গড়া কাঁঠালটির ওজন ছিল ৪২.৭৩ কেজি এবং উচ্চতা ৫৭.১৫ সেন্টিমিটার। কাজেই কুট্টির কাঁঠালের সেই রেকর্ড ভাঙাটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

তবে শেষ পর্যন্ত কুট্টির বিশ্বরেকর্ডের সাধ অপূর্ণই থেকে যেতে পারে। কারণ কোল্লাম-এর এই দৈত্যাকার কাঁঠালের খবর আসতে না আসতেই কেরলের উত্তরাংশের জেলা কান্নুর থেকে আরও একটি দৈত্তাকৃতি কাঁঠালের সন্ধান মিলেছে। আদতে কান্নুরেরই বাসিন্দা, এখন মুম্বইয়ে থাকা বিনোদ নামে এক ব্যক্তির খামারে ফলেছে এই দ্বিতীয় কাঁঠালটি। বিনোদের দাবি এই কাঁঠালটি গাছ থেকে নামানোর পরই তার ওজন করে দেখা গিয়েছিল ৫২.৩৫ কিলোগ্রাম। পরে আঠা কিছুটা ঝরে গেলে পর ওজন দাঁড়িয়েছে ৫২.২ কিলোগ্রামে। বিনোদ-ও গিনেস বিশ্বরেকর্ডের জন্য তাঁর খামারের কাঁঠালের বিভিন্ন ফটো এবং ভিডিও সংগ্রহ করছেন।

কাজেই কেরলে এখন কাঁটালে কাঁঠালে যুদ্ধ। কাগজে কলমে অবশ্যই জেতার দিকে অনেকটাই এগিয়ে আছে বিনোদ-এর কাঁঠাল। কিন্তু, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর বিভিন্ন মাপকাঠি থাকে। তাতে কে যে সেরা হবে, তা ফল ঘোষণার আগে বলা সম্ভব নয়। তাই, করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে একরাশ একঘেয়েমির মধ্যে কেরলবাসীকে চাঙ্গা করে তুলেছে এই টানটান প্রতিযোগিতা।