সংক্ষিপ্ত
গুজরাটের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ঠিক আগে, পরেশ রাওয়াল তার দল বিজেপির প্রচারে এসেছিলেন, যেখানে তিনি একটি জনসভায় ভাষণ দেন। এই ভাষণের কিছু অংশ থেকে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক।
অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ পরেশ রাওয়াল তাঁর রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি ও বাঙালি বিতর্কে তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছেন। গুজরাট নির্বাচনের মাঝামাঝি এই সময়ে তাঁর একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যার জন্য তাকে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গুজরাটের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ঠিক আগে, পরেশ রাওয়াল তার দল বিজেপির প্রচারে এসেছিলেন, যেখানে তিনি একটি জনসভায় ভাষণ দেন। এই ভাষণের কিছু অংশ থেকে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। বিজেপির হয়ে যাওয়া প্রচার সভায় পরেশ বলেন, মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবেন গুজরাটের মানুষ, কিন্তু যদি পাশের বাড়িতে রোহিঙ্গা কিংবা বাংলাদেশীরা এসে উপস্থিত হন? তারপরেই পরেশ বলে বসেন, "তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন, বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?
গুজরাটের ভালসাদে, পরেশ রাওয়াল গুজরাটি ভাষায় জনগণকে ভাষণ দেন। যেখানে দামি গ্যাস সিলিন্ডারের দাবি ও চাকরির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় পরেশ রাওয়াল বলেন, "গ্যাস সিলিন্ডার দামি হলেও সস্তা হয়ে যাবে। মানুষও কর্মসংস্থান পাবে, কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমান ও বাংলাদেশীরা যখন আপনার আশেপাশে থাকতে শুরু করবে তখন কী হবে। যেমনটা হচ্ছে দিল্লিতে। তাহলে আপনি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে পারবেন। কিন্তু সস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার কিনে কি করবে? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবে?"
এখানেই থামেননি অভিনেতা রাওয়াল। নাম না করে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিশানা করে অভিনেতা বলেন, ‘গুজরাটের মানুষ মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবে। কিন্তু তিনি যেভাবে গালিগালাজ করে কথা বলেন। কাউকে একজনকে তাঁর মুখে ডায়পার পরাতে হবে।’ যোগ করেন, ‘তিনি এখানে প্রাইভেট বিমানে আসতেন এরপর রিকশায় বসে দেখাতেন। সারাজীবন অভিনয়ে কাটিয়েছি কিন্তু এমন ‘নটাঙ্কিওয়ালা’ দেখিনি।
পরেশ রাওয়ালের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আমজনতা। এটিকে বাঙালিদের প্রতি ‘ঘৃণাত্মক বক্তব্য’ বলে মনে করছেন। টুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনেকেই। দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিতর্কের ঝড়। সাধারণ বাঙালিদের সঙ্গে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের মিশিয়ে দিয়ে যে কার্যত একটা গোটা জাতিকে অপমান করেছেন রাওয়াল, তার বার্তা দিতে থাকেন নেটিজেনরা। ক্ষোভ করেন বাঙালি-সহ বহু ভারতীয়।
এর পরেই সাধারণ মানুষের একাংশ ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন পরেশের বিরুদ্ধে। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে আসরে নামেন তিনি। টুইট করে সাফাই দেন যে মাছ নিয়ে আলাদা করে বলা ঠিক হয়নি। গুজরাটের মানুষ মাছ খান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাঙালি বলতে তিনি অন্যায় ভাবে থাকা বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গাদের বোঝাতে চেয়েছেন। কারও অনুভূতিতে আঘাত দিতে চাননি।