সংক্ষিপ্ত

মুখতারের মৃত্যুর সাথে সাথে উত্তরপ্রদেশের অপরাধ ও রাজনৈতিক জগতের সেই অধ্যায়টিও বন্ধ হয়ে যায়, যেখানে প্রায় ৪০ বছর ধরে যেকোনো পদক্ষেপে মুখতারের অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। তাকে রবিনহুড ভাবতেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম ছিল না।

উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত মাফিয়া ডন এবং ৫ বারের বিধায়ক, রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারি বৃহস্পতিবার মারা গেছেন। বান্দা কারাগারে বন্দি মুক্তারকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর রানী দুর্গাবতী মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মুখতারের মৃত্যুর সাথে সাথে উত্তরপ্রদেশের অপরাধ ও রাজনৈতিক জগতের সেই অধ্যায়টিও বন্ধ হয়ে যায়, যেখানে প্রায় ৪০ বছর ধরে যেকোনো পদক্ষেপে মুখতারের অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। প্রায় চার দশক ধরে মুখতারের নাম শুনলেই সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও তাকে রবিনহুড ভাবতেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম ছিল না।

কে মুখতার আনসারি

মুখতার আনসারি উত্তর প্রদেশের গাজিপুর জেলার মহম্মাবাদে ৩ জুন, ১৯৬৩ সালে সুবাহুল্লাহ আনসারির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। মুখতারের মা ছিলেন বেগম রাবিয়া, যার বাবা অর্থাৎ মুখতারের দাদু ব্রিগেডিয়ার মহম্মদ উসমান ১৯৪৭ সালে দেশের জন্য শহিদ হন। এজন্য তিনি মহাবীর চক্রে ভূষিত হন। ভারতীয় সেনাবাহিনী মহম্মদ উসমানকে 'নওশেরার সিংহ' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে কাশ্মীরকে রক্ষা করেছিলেন। মুখতারের দাদা ডঃ মুখতার আহমেদও স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ১৯২৬-২৭ সালে কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। মুখতারের বাবারও ছিল অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ভাবমূর্তি। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং বেশ কয়েকবার পৌর নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন।

আধিপত্য বিস্তারের বাসনা তাকে মাফিয়া বানায়

তাহলে মুখতার কীভাবে এত বড় গ্যাংস্টার হয়ে উঠল? লোকসূত্রে খবর মুখতার আধিপত্য বজায় রাখতে পছন্দ করতেন। এই শখ তাকে অন্য জগতে নিয়ে যায়। রেলওয়ের চুক্তি দখল থেকে শুরু করে খনি ও মদের ব্যবসা, তিনি যে অর্থ উপার্জন করেছিলেন তা ধীরে ধীরে মুখতারকে পুরোপুরি অপরাধ জগতের অংশ করে তুলেছিল। একটা সময় ছিল যখন তার সম্মতি ছাড়া পূর্বাঞ্চলে কোনো সরকারি চুক্তি বাকি ছিল না। তবে, গাজীপুর ও আশেপাশের জেলার মানুষের একটি বড় অংশ মুখতারকে রবিনহুড বলেও ডাকে, কারণ তিনি একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকদের আর্থিক সাহায্যও করতেন।

আরও খবরের জন্য এশিয়ানেট নিউজ বাংলা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে চোখ রাখুন, এখানে ক্লিক করুন।