সংক্ষিপ্ত
গত সপ্তাহে গোয়ার সৈকতে দুই নাবালিকার গণধর্ষিতা হয়েছিল এবং দুই নাবালককে বেধড়ক প্রহার করা হয়। সেই ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী এবং তাদের বাবা-মায়েদের দোষারোপ করে সরকারের উপর চাপ বাড়ালেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত।
গত সপ্তাহে দুই নাবালিকার গণধর্ষণ এবং দুই নাবালকের উপর হামলার ঘটনার পর এমনিতেই চাপে ছিলেন। এবার ওই ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী এবং তাদের বাবা-মায়েদের দোষারোপ করে সেই চাপ আরও বাড়ালেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। বুধবার বিধানসবায় তিনি সাফ জানিয়েছেন বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বটা বাবা-মায়েদের, সরকার এবং পুলিশকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আর এরপরই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে গোয়া সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
গত সপ্তাহে দশ জন কিশোর-কিশোরী, পানাজি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের বেনাউলিম সৈকতে পার্টি করতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ছয়জন রাতে বাড়ি ফিরে গেলেও, দুই কিশোর এবং দুই কিশোরী গোটা রাত সমুদ্র-সৈকতেই কাটাবে বলে ঠিক করেছিল। কিন্তু, তাদের সেই রাতে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়েছিল। চারজন পুরুষ, যাদের মধ্যে একজন আবার সরকারী কর্মচারি, আচমকাই সেখানে হাজির হয়। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে প্রথমে দুই কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে। তারপর পালা করে ওই দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিল। আক্রমণটি হয়েছিল।
অভিযুক্ত চারজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করলেও, এই ঘটনার ফলে প্রবল চাপে পড়েছে বিজেপি সরকার। মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত হিসাবে গোয়ার বিশেষ পরিচিতি আছে। তা, বিজেপির শাসনে হারিয়ে যেতে বসেছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে, বিরোধীরা বলছে রাতের গোয়া এখন নারি-পুরুষ নির্বিশেষে কোনও নাগরিকদের জন্যই আর নিরাপদ নয়।
বুধবার, বিরোধীদের চাপের মুখে নিজের সরকার ও পুলিশবাহিনীকে কিন্তু ক্লিনচিটই দিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন, '১৪ বছরের কিশোর-কিশোরীরা কেন গোটা রাত সমুদ্র সৈকতে থাকে, তাদের বাবা-মায়েদের সেই কথা ভাবা উচিত। বাচ্চারা কথা শোনে না বলে আমরা সরকার এবং পুলিশকে এই ঘটনার জন্য দায়বদ্ধ করতে পারি না'। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাবা-মা'র কর্তব্য। মেয়েদের, বিশেষত তারা নাবালিকা হলে, রাতে বাড়ি থেকে বের হতেই দেওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন - বিপর্যয়ের মুখে উত্তর ভারত - মেঘ ফাটা বৃষ্টিতে ভাসল অমরনাথ, হিমাচলে হড়পা বানে মৃত ৯
আরও পড়ুন - ড্রোন হামলার পর এবার 'ফোন হামলা' - সাবধান পাকিস্তান থেকে মুহুর্মুহু আসছে কল, সতর্ক সেনা
আরও পড়ুন - অসম-মিজোরামে মোতায়েন করা হল আধাসেনা, দুই রাজ্যের সীমান্ত সমস্যার সমাধানে বিরাট সিদ্ধান্ত
তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, গোয়া কংগ্রেসের মুখপাত্র আল্টন ডি'কোস্টা বলেছেন, 'রাতে ঘুরে বেড়ানোর সময় আমাদের কেন ভয় পেতে হবে? অপরাধীদের তো থাকা উচিত জেলে, আইন মেনে চলা নাগরিকদের অবাধে ঘোরাফেরা করার অধিকার থাকা উচিত'। অন্যদিকে কয়েকদিন আগে পর্যন্ত বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকা গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির প্রধান বিজয় সারদেসাই, বলেছেন, 'নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তারা যদি তা করতে না পারে তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার কোনও অধিকার নেই'। নির্দল বিধায়ক রোহন খাউন্টে টুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন, 'রাজ্য সরকার যদি আমাদের আমাদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে না পারে তবে কে পারবে?'